ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ২ ১৪৩২

পাকিস্তানে বন্যায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৬৩

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:২৩ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২৫ বৃহস্পতিবার

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে টানা ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও ২৯০ জন। 

গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে বর্ষণ শুরু হওয়ার পর এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অধিকাংশ মানুষ ভবন ধসে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বাকিরা কেউ ডুবে গেছেন, কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী ইসলামাবাদের পাশের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে মানুষ ঘরে থাকে। শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীটি ফুলেফেঁপে ওঠায় তার আশপাশে বসবাসকারী মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক মৃত্যুর ঘটনাগুলো হিসেব করে দেখা যাচ্ছে, চলতি মৌসুমি বৃষ্টির শুরু, অর্থাৎ জুনের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে প্রায় ১৮০ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশু।

এদিকে, পাঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গায় এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। বাতিল কিংবা বিলম্বিত হয়েছে বহু ফ্লাইট। প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’ এ সময় তিনি জনগণকে নিরাপত্তাবিষয়ক নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।

অপরদিকে, চাকওয়াল শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরটিতে বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষদের খুঁজে বের করতে উদ্ধারকারী নৌকাগুলোর মাধ্যমে কাজ করতে দেখা গেছৌ। পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে চক্কর দিতে দেখা গেছে সামরিক হেলিকপ্টারকেও।

পাঞ্জাব প্রশাসন সতর্ক করে জানিয়েছে, সাপ্তাহিক ছুটির পুরো সময়জুড়েই আরও বৃষ্টি ও হঠাৎ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। প্রদেশজুড়ে হাজার হাজার উদ্ধারকর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

২৫ কোটির কাছাকাছি জনসংখ্যার পাকিস্তান জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। দেশটি দুটি বড় আবহাওয়া প্রবাহের মধ্যে রয়েছে— একটি প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার সৃষ্টি করে, অন্যটি নিয়ে আসে মৌসুমি বৃষ্টি। এ ছাড়া পাকিস্তানে রয়েছে ১৩ হাজারেরও বেশি হিমবাহ, যেগুলো খুব দ্রুত গলে যাচ্ছে।

এর আগে, ২০২২ সালে মৌসুমি বৃষ্টিতে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে গিয়েছিল। প্রাণহানি হয়েছিল এক হাজার ৭০০ জনের। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় ৩০ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের মহাসচিব দেশটির পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছিলেন। 

তিনি বলেছিলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তান একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনি ‘নৈতিকভাবে দেউলিয়া’ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থারও শিকার।

এসএস//