ঢাকা, শুক্রবার   ০১ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ১৬ ১৪৩২

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকলে সংকট আরও গভীর হবে : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৫১ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৫ বুধবার | আপডেট: ০২:৫৫ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৫ বুধবার

বর্তমান সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন, সংস্কার নাকি বিচার—এই তিনটি বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে? জামায়াত ও এনসিপি সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির দাবি করছে; অপরদিকে বিএনপি প্রচলিত সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, সংকট ততই গভীর হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। 

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশের এক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন তিনি। 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিদায়ের সময় এসেছে। এই সরকার কোন পদ্ধতিতে ক্ষমতা ছাড়বে, সেটা এখনই স্পষ্ট করা জরুরি। সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, সংকট ততই গভীর হবে। ফলে সংকট নিরসনে দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। নির্বাচন অক্টোবরে হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, পিআর পদ্ধতি ভালো হলেও এখন তা সময়োপযোগী নয়।

এদিকে সেমিনারে ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশের সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহ আল মামুন ২৬টি দেশে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকাল, সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে করা গবেষণার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।  

গবেষণায় দেখা যায়, ২৬টি দেশের মধ্যে ১৬টি দেশই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করেছে। এতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং দ্রুত সংস্কার কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে।

গবেষণায় আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় দেয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আরও বলেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রমও কার্যত সময়ক্ষেপণ ছাড়া কিছু নয়।

গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল—বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর) কতটা বাস্তবসম্মত। এ নিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখনো এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয়। যারা এই পদ্ধতির দাবি তুলছেন, তারা মূলত দলের স্বার্থে কথা বলছেন, দেশের স্বার্থে নয়। অনেকেই মনে করেন, সরকারকে সময় বাড়ানোর সুযোগ দিতেই এই দাবির পেছনে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকায় দেশের অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা ও সামগ্রিক পরিস্থিতি দিন দিন ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। তাই দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়েই এ সংকটের সমাধান হওয়া উচিত।

এসএস//