ছেলের গলা কাটা লাশ দেখে বাবার আর্তনাদ, ‘ভ্যান নিবি নে, ছোয়াল মারলি ক্যান?’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৩ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৫ সোমবার | আপডেট: ১১:৩২ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৫ সোমবার

ভ্যান চালিয়ে সংসার খরচ চালান ইউনুস শেখ। কোনো কোনোদিন সেই ভ্যান নিয়েই যাত্রী পরিবহনে বের হয় তাঁর কিশোর ছেলে হৃদয় আলী (১৫)। বাবার ওপর চাপ কমাতে রোববার বিকেলেও ভাড়া নিয়ে যায় সে। তবে রাতে আর ফেরেনি হৃদয়। সোমবার সকালে পদ্মা নদীর তীরের এক বাগানে মিলেছে এই কিশোরের গলা কাটা লাশ। হদিস মেলেনি ভ্যানটিরও।
সোমাবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে থানা চত্বরে সন্তান হারানোর শোকে আহাজারি করছিলেন ইউনুস শেখ। তিনি অভিযোগ করেন, ভ্যান ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যই তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। ইউনুস বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘তোরা ভ্যান নিবি, নে! আমার ছোয়ালকে মারলি ক্যান?’
হৃদয়ের লাশ বেলা ১১টার দিকে পাওয়া যায় পদ্মা নদীর কোলের হাসিমপুর বাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার দূরের চরে। সেখানে কলা ও সবজি আবাদ করেন কৃষকরা। নদীপারের একটি কলাবাগানের কোণে পড়ে ছিল হৃদয়ের লাশ। তার গলার শ্বাসনালি পর্যন্ত কাটা। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন।
নিহত হৃদয়ের বাড়ি কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এলংগী এলাকায়। তার লাশ উদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে কুমারখালী থানায় চারজনের নামে হত্যা মামলা করেন ইউনুস শেখ। এতে আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো– উপজেলার বাটিকামারার রাকিব হোসেন (২২), জীবন হোসেন (২০), দুর্গাপুরের মোস্তাফিজুর রহমান (২০) ও ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর।
আজ বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমারখালী থানার ওসি মো. আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রথমে চালক হৃদয়ের কাছ থেকে ভ্যানটি ভাড়া করে তিনজন। বিভিন্ন জায়গায় তাকে নিয়ে ঘোরাঘুরির পর হাসিমপুর বাঁধে যায় তারা। সেখানে ভ্যান রেখে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পদ্মাপারের বাগানে নিয়ে যায় হৃদয়কে। সেখানেই গামছা দিয়ে তার মুখ বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
সংবাদ পেয়ে সেখানে আসা চাচা ফিরোজ শেখ জানান, গতকাল রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি হৃদয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাকে না পেয়ে সকালে থানায় যান। পরে খবর পেয়ে পদ্মার চরে এসে গলাকাটা লাশ পেয়েছেন।
এসএস//