ঢাকা, সোমবার   ২৫ আগস্ট ২০২৫,   ভাদ্র ১০ ১৪৩২

স্বামী-দেবরকে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা, আটক ২

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:১১ এএম, ২৫ আগস্ট ২০২৫ সোমবার

নোয়াখালী পৌর এলাকায় স্বামী, শাশুড়ি ও দেবরকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে (১৮) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ৭/৮ জন যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় লোকজন।

রোববার (২৪ আগস্ট) বিকালে মাইজদী পৌরবাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। 

আটককৃতরা হচ্ছেন, জেলার সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের দরবেশপুর গ্রামের ওলি উল্যার ছেলে হানিফ (২৯( ও একই ইউনিয়নের বাহাদিপুর গ্রামের আবুল কাশেমেরে ছেলে কামরুল (৪৫)।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, গত শুক্রবার ভোরে সুবর্ণচর তাদের বাড়ি থেকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে রাগ করে বের হয়ে মাইজদী চলে আসেন তার স্বামী। পরে স্বামীর পেছনে পেছনে অন্য একটি গাড়ি নিয়ে মাইজদী পৌরবাজার আসেন তিনি। সকাল ৭টার দিকে তারা দুইজন পৌর বাজারের একটি দোকানের সামনে বাকবির্তকে লিপ্ত হন। এর এক পর্যায়ে হানিফসহ দুইজন এগিয়ে এসে ছেলেটি কে জানতে চাইলে তিনি স্বামী বলে তাদের জানান। তারপরও হানিফসহ ওই দুইজন তার স্বামীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। 

তিনি আরও জানান, এর কিছুক্ষণ পর বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে তাদের দুইজনকে পৌর বাজারের একটি পরিত্যাক্ত ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে হানিফদের সাথে আরও ৪/৫জন যুক্ত হয়ে স্বামীকে একটি কক্ষে ও স্ত্রীকে আরেকটি কক্ষে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি তার স্বামী মোবাইলে মাইজদী বাসায় থাকা তারা মাকে জানালে তার মা ও ছোটভাই ঘটনাস্থলে আসে। এসময় দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির নিচে থাকা আরও কয়েকজন তার মা ও ছোটভাইকে একই কক্ষে এনে আটক করে রাখে। 
পরবর্তীতে তারা পাশের কক্ষে ভুক্তভোগিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় এবং তার পরনের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। ধর্ষণের চেষ্টাকারীদের সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে নিজের সম্মান বাঁচাতে দ্বিতীয় তলার ছাদ থেকে নিচে লাফ দিয়ে পড়েন তিনি (গৃহবধূ)।

ভুক্তভোগীর শাশুড়ি বলেন, লাফ দেওয়া ও তার চিৎকার শুনে তারা তিনজন ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখেন গৃহবধূ নিচে আহত অবস্থায় পড়ে আছে সে উঠে দাঁড়াতে পারছে না। এসময় ওই যুবকরা আবারও তাকে টেনে হিঁছড়ে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। 

পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার বাম পা রড ডুকে কেটে এবং ভেঙে গেছে। পরে বিষয়টি তারা পৌর বাজার ব্যবসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম মুক্তাকে জানান। এরমাঝে একদিন তারা গৃহবধূর চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় থানায় অভিযোগ করতে পারেননি।

পৌর বাজার ব্যবসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম মুক্তা জানান, ঘটনার দিন তিনি নোয়াখালীর বাইরে ছিলেন। পরদিন নোয়াখালী আসার পর তিনি আহত গৃহধূকে হাসপাতাল দেখতে যান এবং তার কাছ থেকে ঘটনার বিষয়টি শুনে স্থানীয়দের কাছ থেকে ওই যুবকদের তথ্য নেন। রোববার বিকালে তাদের মধ্যে হানিফ ও কামরুলকে পৌর বাজারে দেখতে পেয়ে লোকজন আটক করে এবং পরবর্তীতে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের ধরতে আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো বলে জানান তিনি।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তদের আটক করেছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জড়িত অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এএইচ