ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ আগস্ট ২০২৫,   ভাদ্র ১৩ ১৪৩২

গাজায় অনাহারে এখন পর্যন্ত ১১৯ শিশুসহ মৃত্যু ৩১৩

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ২৮ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অপুষ্টি ও অনাহারে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত ২৭ মের পর পর্যন্ত উপত্যকায় অনাহারে প্রাণ গেছে ৩১৩ জনের। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১১৯। এ ছাড়া তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে আরও এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু। 

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

পাশাপাশি বোমা ফেলে ও ত্রাণকেন্দ্রে খাবারসামগ্রী বিতরণের নামেও হত্যাকাণ্ড চলছে। 

আলজাজিরা জানায়, গতকাল বুধবার এক দিনে ইসরায়েলের হামলায় ১৮ ত্রাণপ্রত্যাশীসহ অন্তত ৭৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৬৮ জন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত গাজায় ৬২ হাজার ৮৯৫ জন নিহত ও ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯২৭ জন আহত হয়েছেন। হতাহত অধিকাংশই নারী ও শিশু। 

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ অনেকটাই কমেছে। এতে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। উপত্যকার অন্তত ১০ লাখ শিশু ভয়াবহ অপুষ্টির ঝুঁকিতে আছে। গাজা সিটির অর্ধেক সংখ্যকের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করছে। 

সংস্থাটি বলছে, ইসরায়েল কোনো নীতি-নিয়মের তোয়াক্কা করছে না। কার্যত গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ধসে পড়ার মুখে। 

এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক উপপ্রধান জয়েস মুসুইয়া জানান, উত্তর-মধ্য গাজায়, বিশেষ করে গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি দক্ষিণের দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহার, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন। সেপ্টেম্বরের শেষে এই সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গাজার কার্যত কোনো মানুষই ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচতে পারছেন না।

গাজার আল নাসের হাসপাতালে গত সোমবার ইসারয়েলের পরপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। ওই হামলায় ৫ সাংবাদিকসহ ২১ জন নিহত হন। ইসরায়েল ওই হাসপাতালে হামলা চালালে সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করতে যান। সেই সঙ্গে উদ্ধারকর্মীরাও হাজির হন। প্রথম হামলার ১৫ মিনিট পর দ্বিতীয় হামলা চালানো হয়। এতে নিহত প্রায় সবাই সাংবাদিক ও উদ্ধারকর্মী। 

এক সংবাদ সম্মেলনে মেলোনি বলেন, ‘এটা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর অগ্রহণযোগ্য হামলা।’ তিনি গাজায় আগ্রাসন বন্ধেরও জোর আহ্বান জানান। 

এর আগে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো এ হামলার নিন্দা জানায়। এছাড়া যুক্তরাজ্য বলেছে, বেসামরিক নাগরিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাংবাদিকদের অবশ্যই সুরক্ষা দিতে হবে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘দ্রুত যুদ্ধবিরতি’র দাবি জানান। 

গাজায় এমএসএফের অস্থায়ী চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে গত বছর যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু। দ্য ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, সব মিলিয়ে ছয়টি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র পরিচালনা করেছে সংগঠনটি। তারা সব মিলিয়ে ৯০ হাজার জনকে চিকিৎসা দিয়েছে। তাদের সিংহভাগই বোমা, কামানের গোলা ও গুলিতে আহত হয়েছিলেন।

এএইচ