শুল্কের ধাক্কা সামলাতে ৪০ দেশে দরজায় কড়া নাড়ছে মোদি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:২০ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার

রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতীয় পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে ভারতের অর্থনীতি। অতিরিক্ত শুল্কের চাপে দেশটির শিল্পকারখানাগুলো কার্যত ধুঁকছে এবং শ্রমিকদের বেতন দেওয়া নিয়েও সংশয়ের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে বস্ত্র ও পোশাকের বিকল্প বাজারের খুঁজছে নয়াদিল্লি।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, তারা ৪০টি দেশের কাছে যাচ্ছেন ও যাবেন, যাতে তারা বেশি করে ভারতীয় বস্ত্র ও পোশাক কেনে।
এই দেশগুলোর মধ্যে আছে, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইটালি, স্পেন, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসের মতো ইউরোপের দেশগুলো, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এশিয়ার দেশ। তাছাড়া আছে অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, আমিরাত, ক্যানাডা, মেক্সিকোর মতো দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে ভারত। এছাড়া রাশিয়া ও চীনের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে ও হবে।
এই ৪০টি দেশে সম্মিলিতভাবে ৫৯০ বিলিয়ান মার্কিন ডলারের বাজার আছে। ভারত এই দেশগুলোকে বলবে, তাদের পোশাক ও বস্ত্রের মান খুব ভালো, টেকসই ও তার মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার ছাপ স্পষ্ট। সেজন্যই ভারতীয় পোশাক ও বস্ত্র অন্যদের থেকে আলাদা।
যুক্তরাষ্ট্রে ভারত গত আর্থিক বছরে এক হাজার ৮০ কোটি ডলারের বস্ত্র ও পোশাক রফতানিনি করেছিল। ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক বসানোর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক ও বস্ত্র রপ্তানি বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই ক্ষতিপূরণের জন্যই এই নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই দেশের ভারতীয় দূতাবাস এবং ভারতীয় শিল্প ও বাণিজ্য সংগঠনগুলি ৪০টি দেশে পোশাক ও বস্ত্র রপ্তানি বাড়াবার চেষ্টা করবে।
ভারতের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যোজনা কমিশনের সাবেক আমলা ও লেখক অমিতাভ রায় বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্কের ধাক্কা সামলাবার জন্য ভারতকে অন্য দেশে বাজার খুঁজতে হবে এবং দেশের বাজারকেও আরো চঙ্গা করতে হবে।’
তার মতে, ‘ভারত যে ৪০টি দেশ বেছে নিয়ে সেখানে পোশাক ও বস্ত্র রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে এটা ঠিক পদক্ষেপ। তবে সমস্যা হলো, ইউরোপের দেশগুলো থেকে শুরু অস্ট্রেলিয়া, কানাডার মতো দেশের জনসংখ্যা ও চাহিদা তুলনায় কম। রাশিয়ার কাছে এখন অর্থ নেই। চীন নিজের দেশের বাইরে ভিয়েতনাম থেকে সস্তায় পোশাক ও বস্ত্র কেনে। তারা যদি এরপরও ভারত থেকে পোশাক ও বস্ত্র কিনতে রাজি হয় তাহলে ভালো কথা। সেজন্যই আমাদের নিজের দেশের ভেতরে বাজার বাড়াতেই হবে।’
তিনি বলেছেন, ‘যে পোশাকটা যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজার টাকা দামে বিক্রি করা হয়, সেটা বানাতে হয়ত একশ টাকা লাগে। এখন সামান্য লাভ রেখে তা দেশে বিক্রির ব্যবস্থা করুক উৎপাদনকারীরা। তাতে তাদের লাভের পরিমাণ হয়তো কম হবে, কিন্তু পণ্য বিক্রি হয়ে যাবে এবং এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরাও বাঁচবেন।’
সূত্র: ডয়চে ভেলে
এসএস//