বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে চীনে রফতানি বাড়ানো জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫৬ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার | আপডেট: ০৫:৫৭ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, তৈরি পোশাকসহ অনেক খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও সামগ্রিকভাবে পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে চীনে পণ্যের রফতানি বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে জ্বালানি, অবকাঠামোসহ উদ্ভাবনী শিল্পে আরও বেশি চীনা বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশে অবস্থিত চীনের দূতাবাস এবং চায়নিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি)।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি: সারাবাংলা
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন— বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইআরডি প্রধান মিনারা মাহরুখ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেন এবং সিইএবি প্রেসিডেন্ট হান কুন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই তিনশ শতাংশ বেড়েছে। আমাদের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে এগোতে হবে। উৎপাদন ও প্যাকেজিংয়ে চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ আরও অগ্রগতি অর্জন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর বিপুল প্রাণহানি ঘটে। অবকাঠামো ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। ইতোমধ্যেই চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের রফতানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। চলতি বছরে বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রফতানি হয়েছে। আনারস ও পেয়ারা রফতানির বিষয়েও আলোচনা এগোচ্ছে।’
এ সময় তিনি জানান, আগামী রোববার ট্যারিফ ইস্যুতে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম দেশ যারা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে সম্মতি দিয়েছিল। বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় চীন সহযোগী হতে চায়। এই প্রদর্শনী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিনারা মাহরুখ বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু রাষ্ট্র। অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, প্রকৌশল ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে তাদের বিনিয়োগ অব্যাহত রয়েছে। কোভিডকালে টিকা ও টেস্টিং কিট সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা দুর্যোগে চীন বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দিয়ে তারা অন্তর্বর্তী সরকারকেও সহযোগিতা করেছে।’
বক্তারা বলেন, এই প্রদর্শনী শুধু বাণিজ্যিক মেলা নয়, বরং দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। এতে প্রকৌশল, নির্মাণ, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, ফার্মাসিউটিক্যালস, কৃষি, আর্থিক সেবা ও পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতের শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশে চীনের সহায়তায় ইতোমধ্যেই পদ্মা রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, এ প্রদর্শনী সহযোগিতাকে নতুন স্তরে নিয়ে যাবে।
দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী চলবে ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এতে বাংলাদেশের আটটি এবং চীনের ৩২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
এসএস//