১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকা পাবে ৫ কোটি শিশু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫১ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রবিবার

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেছেন, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে।
আজ রোববার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাজারে টাইফয়েডের কিছু টিকা রয়েছে। কিন্তু, এই টিকা অনেক উন্নতমানের এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত।
তিনি বলেন, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে পরবর্তী দশ দিন ঢাকাসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের স্কুল কলেজে টিকা দান কার্যক্রম চলবে। েএরপর পহেলা নভেম্বর থেকে পরবর্তী দশ দিন ইউনিয়ন পর্যায়ে সেন্টারগুলো থেকে টিকা দেওয়া হবে।
গত ১ আগস্ট থেকে সারাদেশে স্কুল কলেজগুলোতে এ বিষয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। www.vexepi.gov.bd এই ওয়েবসাইটে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য দিয়ে শিশুদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
যাদের এই রেজিস্ট্রেশন থাকবে টিকাদানে তারা ১২ অক্টোবর থেকে যেকোনো সেন্টারে গিয়ে টিকা দিতে পারবে।
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সেন্টারগুলোতে শিশুরা টিকা দিতে পারবে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা আছে।
মহাপরিচালক বলেন, টাইফয়েড একটি সংক্রামক রোগ। খাওয়ার আগে এবং মলমূত্রত্যাগের পরে ভালোভাবে হাত ধুলে এই রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। তবে অন্যান্য কারণেও এই টাইপের রোগ হতে পারে।
তিনি বলেন, টাইফয়েড রোগ একটি ছোঁয়াচে এবং কঠিন রোগ। মহাপরিচালক বলেন, সারাদেশের নয় মাস বয়স থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।
মহাপরিচালক বলেন, যাদের জন্ম সনদ নেই তাদেরকেও টিকা দেওয়া হবে। তবে সে ক্ষেত্রে তাদের তথ্য বিস্তারিতভাবে সেন্টারগুলো কর্মকর্তাদের কাছে দিতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, বাংলাদেশে সংক্রমণজনিত রোগের অন্যতম প্রধান কারণ টাইফয়েড। টাইফয়েড জ্বর ‘স্যালমোনেলা টাইফি’ নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। মূলত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে।
তিনি বলেন, টাইফয়েড প্রতিরোধে টিসিভি (টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন) টিকা কার্যকর ও নিরাপদ।
মহাপরিচালক জানান, বিশ্বব্যাপী এই টিকা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছাড়াই শিশুরা গ্রহণ করছে। পাকিস্তান, নেপাল ও বিভিন্ন দেশে এই টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত টিসিভি টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক যাচাইকৃত। টিসিভি টিকা দেওয়ার পর সামান্য প্রতিক্রিয়া, যেমন: টিকা দেওয়ার স্থানে চামড়া লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, সামান্য ব্যথা, অল্প জ্বর, মাথা ব্যাথা, ক্লান্তি ভাব এবং মাংসপেশিতে ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে; যেগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
মহাপরিচালক বলেন, টিকাদান ক্যাম্পেইন চলাকালে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি ও সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের বিদ্যমান ইপিআই স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে এই টিকা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, দুই বছর এবং তার কম বয়সি শিশুদের ০.৫ এম.এল, পরিমাণ টিকা উরুর মধ্যভাগের বাইরের অংশের মাংসপেশিতে এবং দুই বছরের অধিক বয়সীদের বাহুর উপরিভাগে বাইরের অংশে সমপরিমাণ ডোজ ডেল্টয়েড মাংসপেশিতে প্রদান করা হয়।
মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুরাই টাইফয়েড রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। টিসিভি এক ডোজ টিকা এই বয়সে প্রদান করলে অধিক মাত্রায় রোগ প্রতিরোধ করে। সেজন্য এই ক্যাম্পেইনে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের এই টিকা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অ্যাডমিন ও প্লানিং, পরিচালক প্রশাসন ডাক্তার মোহাম্মদ আবু হানিফ, ইপিআই’র লাইন ডিরেক্টর ডাক্তার মো. আব্দুল্লাহ আল মুরাদসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এএইচ