‘অ্যান্টিফা’ আন্দোলনকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার ইঙ্গিত ট্রাম্পের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪৪ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফ্যাসিবাদবিরোধী ‘অ্যান্টিফা’ আন্দোলনকে তিনি একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি এই আন্দোলনকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ‘চিহ্নিত’ করছেন। তিনি আরও লেখেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করছি, যারা অ্যান্টিফাকে অর্থায়ন করছে, সর্বোচ্চ আইনি মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে।’
ট্রাম্পের এ ঘোষণার আইনি গুরুত্ব কতটা, তা স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘অ্যান্টিফা’ একটি ঢিলেঢালাভাবে সংগঠিত আদর্শিক আন্দোলন, যার কোনো স্পষ্ট নেতৃত্ব বা শ্রেণিবিন্যাস কাঠামো নেই। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন ২২ বছর বয়সী টাইলর রবিনসনের বিরুদ্ধে ইউটাহ প্রদেশের প্রসিকিউটরেরা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছেন। তবে এই অভিযোগের এক দিন পরও বাইরের কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে তাঁর উদ্দেশ্য সম্পর্কেও প্রশ্ন থেকে গেছে।
তবে কার্কের হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বারবার বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে রক্ষণশীলদের প্রতি বৈরী পরিবেশ তৈরির জন্য দায়ী করে আসছিলেন। গতকাল ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, হোয়াইট হাউস রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য-সম্পর্কিত একটি নির্বাহী আদেশ জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স গতকাল ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বারবার কার্কের হত্যাকাণ্ডের জন্য বামপন্থী রাজনৈতিক উগ্রবাদকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, হোয়াইট হাউস কঠোরভাবে কাজ করছে, যাতে ‘বামপন্থী সহিংসতার অর্থায়নকারী নেটওয়ার্কগুলোকে’ একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের মতোই বিবেচনা করা হয়।
তবে ট্রাম্পের সমালোচকেরা বলছেন, কার্কের হত্যাকাণ্ডকে তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম ২০২০ সালে মিনিয়াপলিসে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর দেশব্যাপী সহিংস বিক্ষোভের সময় অ্যান্টিফাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার ধারণাটি তুলে ধরেন। সে সময় আইনি বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, এমন পদক্ষেপের কোনো আইনি ভিত্তি নেই, এটি কার্যকর করা কঠিন হবে এবং এতে বাক্স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবে। কারণ, কোনো আদর্শ বিশ্বাস করাকে সাধারণত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না।
এসএস//