ঢাকা, রবিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ৬ ১৪৩২

আওয়ামী লীগকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত: নাহিদ ইসলাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৩০ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রবিবার

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনা উচিত।

আজ রোববার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চব্বিশের জুলাই-আাগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য ও জেরা শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা উচিত, সেই সুযোগও আছে। আমরাও ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন জানাবো। ট্রাইব্যুনালের কাছে এখন যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এসেছে। শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা নিরংকুশ ও ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদেরকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জনগণ প্রতিরোধ করে তাকে উৎখাত করেছে। ফলে এটা আওয়ামী লীগের সংঘটিত অপরাধ রাজনৈতিকভাবে। তাই দল হিসেবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।

নাহিদ বলেন, নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কেননা তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই বিচারের আওতায় এনেই দলগত হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ অস্থায়ী সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগকে টেকাল দেওয়া যাবে না। এছাড়া ফ্যাসিবাদের দোসরদেরও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ পৃথিবীর ইতিহাসে লেখা হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন এই সাক্ষী। 

বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার পর আজ নাহিদ ইসলামের জেরা শেষ হয়।

মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস.এইচ. তামিম শুনানি করেন। সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। 

এই মামলায় পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। 

একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্যটি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

এএইচ