থেয়ারওয়ার্ল্ডের আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড পেলেন প্রধান উপদেষ্টা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৫ এএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বুধবার

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত থেয়ারওয়ার্ল্ডের বার্ষিক উচ্চপর্যায়ের গ্লোবাল এডুকেশন ডিনারে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের একটি হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসকে দেওয়া হয় থেয়ারওয়ার্ল্ডের আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড। শিক্ষা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর পথপ্রদর্শক ভূমিকা এবং মানবকল্যাণে আজীবন প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
শিশুদের জন্য নিবেদিত আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা থেয়ারওয়ার্ল্ড বিশ্বব্যাপী শিক্ষা সংকট নিরসন ও নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা বিকাশে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং থেয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ার ও গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের নির্বাহী চেয়ার সারা ব্রাউন। অনুষ্ঠানে শিক্ষার রূপান্তরমূলক শক্তিকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডিকেও সম্মাননা দেওয়া হয়। তবে দারিদ্র্য দূরীকরণে মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রম এবং শিক্ষাকে তার কেন্দ্রীয় অংশে অন্তর্ভুক্ত করার আজীবন সংগ্রামের কারণে ইউনূসের স্বীকৃতি বেশি গুরুত্ব পায়।
গর্ডন ব্রাউন পুরস্কার প্রদানকালে বলেন, গত পঞ্চাশ বছরে বেসরকারি খাতে কোনো প্রকল্প মানুষের দারিদ্র্যমুক্তিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্যোগের মতো কার্যকর ভূমিকা রাখেনি। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বিশ্বব্যাপী এক পথপ্রদর্শক হিসেবে অভিহিত করেন।
পুরস্কার গ্রহণকালে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো ঋণও একটি মৌলিক মানবাধিকার। তিনি বলেন, ‘যদি আর্থিক ব্যবস্থার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়, তবে পৃথিবীতে কেউ আর গরিব থাকবে না। আমি মাইক্রোক্রেডিটের প্যাকেজে শিক্ষাকে যুক্ত এবং নারীদের সহায়তা করেছি, যাতে তারা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস আর্থিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার আন্তঃসম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মাইক্রোক্রেডিটের সুযোগ নিয়ে বহু নারী তাদের পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছেন এবং সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শিক্ষার প্রচলিত ধ্যানধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা মানসিকতা গড়ে তোলার শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন।
‘একজন শিশুর শেখা উচিত কিভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায়,’ তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসাকে মানবকল্যাণের শক্তি হিসেবে ব্যবহার করার শিক্ষা দিতে হবে। ‘বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত এমন এক স্থান, যেখানে মানব সমস্যার সমাধান শুধু উৎসাহিতই নয়, প্রত্যাশিতও হবে,’ যোগ করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মানবসমাজের সব সমস্যারই ব্যবসায়িক সমাধান সম্ভব।’
এসএস//