ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১০ ১৪৩২

দুর্গাপূজার আগে কলকাতায় শোকের মাতম, বৃষ্টিতে প্রাণ গেল ১২ জনের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৫ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

দুর্গাপূজার মাত্র কয়েক দিন আগে প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়েছে কলকাতা ও আশপাশের এলাকা। এক রাতের বৃষ্টিতেই প্রাণ গেছে অন্তত ১২ জনের (রয়টার্স)। যদিও এনডিটিভি বলছে ১০ জনের মৃত্যুর কথা। স্থানীয় প্রশাসন এবং বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শহরের প্রধান সড়কগুলো ডুবে গেছে পানিতে, ভেঙে পড়েছে পরিবহনব্যবস্থা এবং হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) কলকাতা আঞ্চলিক প্রধান এইচ আর বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার ভোর থেকে ২৪ ঘণ্টায় ২৫১.৬ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৮৮ সালের পর শহরে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত।

পুলিশ জানায়, নিহতদের মধ্যে কলকাতায় ৯ জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া পানিতে ডুবে মারা গেছেন আরও ২ জন।

বৃষ্টিতে রাজ্যের রাজধানী কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাঁশ ও কাপড়ে তৈরি মণ্ডপ, দেব-দেবীর মাটির প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোমরসমান পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, যানবাহন আটকে পড়ে। যাত্রীদের অনেককেই হাঁটতে হয়েছে জলমগ্ন পথে।

এ ছাড়া সড়ক, ট্রেন ও বিমান চলাচলও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। বেশ কয়েকটি ট্রেন ও ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়। বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতে হয় বহু এলাকাকে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ রঞ্জন পাণ্ডা বলেন, ‘ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় এবং রাস্তাগুলো সম্পূর্ণ জলমগ্ন থাকায় আমি হোটেলেই আটকা পড়েছি।’

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সড়ক ও রেললাইন থেকে পানি সরাতে পাম্প বসানো হয়েছে। খাদ্য বিতরণ ও জরুরি সেবাও অব্যাহত আছে।

আইএমডি জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে আগামী কয়েক দিনে রাজ্যসহ পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জেলায় আরও বৃষ্টি হতে পারে।

রাজ্য সরকার আজ বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সব স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। শুক্রবার থেকে শুরু হবে দুর্গাপূজার সরকারি ছুটি। কর্মকর্তারা আশা করছেন, বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কলকাতার বাসিন্দা সন্দীপ ঘোষ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘মাত্র চার ঘণ্টার বৃষ্টির পর শহরের এই অবস্থা হবে, তা আমরা ভাবতেও পারিনি। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভয়াবহ।’

সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি

এসএস//