বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে গঠন করা হবে কমিশন:তারেক রহমান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৪৩ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৪৫ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের বিষয়ে ‘উচ্চ পর্যায়ের কমিশন’ এবং শিক্ষা কারিকুলাম ঢেলে সাজাতে ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের কথা জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিক্ষকদের এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষক মহাসমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন,আমরা যদি আমাদের শিক্ষা, আমাদের জাতিকে গঠন করে তুলতে চাই, তাহলে আমাদের যে পরিকল্পনাগুলো রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি, সেগুলোকে সফল করার জন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমি কামনা করছি।
তিনি বলেন, প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলামকে ব্যবহারিক এবং কারিগরি শিক্ষা প্রদান করে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে চাই। নৈতিকতা এবং ধর্মীয় সামাজিক মূল্যবোধের আলোকে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না যায়, তাহলে এই কম্পিটিশনের বিশ্বে আমাদের দেশ হিসেবে জাতি হিসেবে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হবে।
তিনি বলেন, এই সমাবেশে আপনাদের অনেকের বক্তব্যে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ প্রসঙ্গ এসেছে, কেউ কেউ মনে হয় আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিভুক্ত করার কথা বলেছেন। এ ছাড়াও আপনাদের এই সংগঠনের বাইরেও বেসরকারি শিক্ষকদের বেশ কিছু দাবি রয়েছে। জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে অবশ্যই রাষ্ট্রের সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বাড়ানো কিংবা চাকরি স্থায়ীকরণ কিংবা জাতীয়করণের বিষয়টি ইতিবাচক বিবেচনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিশন আমরা গঠন করব ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষকদের আর্থিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ কী কী গ্রহণ করা যায়, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। দেশের শিক্ষক সমাজের বিশেষ করে স্কুল-মাদ্রাসার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং সামাজিক সম্মান সমুন্নত করে শিক্ষকতা পেশাকে সুযোগ ও সম্মানের দিক থেকে প্রতিযোগিতামূলক করে গড়ে তোলার প্রয়োজন আছে অবশ্যই।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক সংস্কার কিংবা নাগরিক উন্নয়নে আমরা যত উদ্যোগ গ্রহণ করি না কেন, শিক্ষা ব্যবস্থাপনার আধুনিকীরণ এবং শিক্ষকদের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা সম্মান যদি আমরা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে অবশ্যই আমরা যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটিতে আমাদের কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।
রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,আমি আমার আরো একটি পরিকল্পনার কথা আপনাদের সামনে শেয়ার করতে চাই।আমি মনে করি জাতীয় দিবসগুলোতে আমন্ত্রিত অতীতের তালিকায় অবশ্যই প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের কমপক্ষে একজন করে শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো অত্যন্ত জরুরি। এটি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনে ‘ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্স’ বা রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা পুনর্মূল্যায়ন করে রাষ্ট্র এবং সমাজের শিক্ষা এবং শিক্ষকের মর্যাদা সমুন্নত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তাদের রোল মডেল শিক্ষকদেরকে সম্মানজনক অবস্থানে এবং বিচরণ করতে দেখলে সেটি অবশ্যই কোমলমতি শিক্ষকদের মনোজগতে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে অতিরিক্ত মহাসচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম আমানুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য আফম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুগিসউদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য দেন।
এছাড়াও সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আফরোজা খান রীতাও উপস্থিত ছিলেন।
এমআর//