ঢাকা, রবিবার   ১২ অক্টোবর ২০২৫,   আশ্বিন ২৭ ১৪৩২

‘বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের বিরত রাখা হবে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৪৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫ রবিবার | আপডেট: ০৩:৫৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫ রবিবার

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হবে।

রোববার সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নকরণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাতে কোনো আইন বহির্ভূত কাজ না করে সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়ার আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা। 

তিনি বলেন, দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ হবে। এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১ হাজার ১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশ নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। তা ছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত থাকা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেজন্য টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল যেটা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন শান্ত ও ভালো রয়েছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফ্যাসিস্টের লোকজন শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছিল। কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীও এতে ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতার কারণে তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। সবার সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি দেশের বাইরে যাব কেন, আমার স্ত্রী-সন্তান দেশেই থাকে। বিদেশে কার কাছে যাব।

ট্রাইব্যুনালে পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিচার চলাকালে সেনাবাহিনী তাদের হেফাজতে রাখতে চায়—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা, আইনে যা আছে তাই হবে।

মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বাহকদের নয়, মাদকের গডফাদারদের আটক করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এএইচ