দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ রবিবার

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনী প্রচারের নিরাপত্তায় দলটিকে এই গাড়ি কেনার অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মূলত, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনী প্রচারের নিরাপত্তায় একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি নেতাদের নিরাপত্তার জন্য একটি বুলেটপ্রুফ মিনি বাস কেনারও অনুমতি পেয়েছে দলটি।
তবে কী ধরনের বা কোন মডেলের গাড়ি আনা হচ্ছে, তা এখনো জানা যায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে এই দুটি গাড়ি কেনার বিষয়ে সরকারকে চিঠি দেওয়ার পর সেটির অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিএনপিকে একটি বুলেটপ্রুফ বাস কেনার অনুমতি দেওয়া হয় চলতি মাসের শুরুর দিকে। এর আগে, গত জুন মাসে একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি দেওয়া হয়।
বুলেটপ্রুফ গাড়ির পর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে বিএনপি। মন্ত্রণালয় সূত্র সম্প্রতি জানায়, একটি শটগান ও দুটি পিস্তলের লাইসেন্সের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গত ৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে প্রায় পাঁচ মাস আগে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার বিষয়ে নথি পাঠানো হয়েছিল। স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পুলিশের বিশেষ শাখা বা এসবি) প্রতিবেদন নিয়ে তার গাড়ির বিষয়ে তখনই অনুমতি দিয়েছি। আর নতুন করে আবেদন এসেছিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ির জন্য। তার গাড়ির বিষয়েও আমরা এসবির প্রতিবেদন পেয়েছি। এটারও অনুমতি ৬ অক্টোবর আমরা দিয়েছি। জাপান থেকে গাড়ি আমদানি করা হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর এ ব্যাপারে বলেন, নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জনসংযোগ করতে সারা দেশ ভ্রমণ করবেন; মানুষের সঙ্গে মিশবেন। একদিকে তাদের নিরাপত্তা, অন্যদিকে জনসম্পৃক্ততা। এই সময়ে তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জরুরি। এ কারণেই বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বুলেটপ্রুফ গাড়ির অনুমতি সাধারণত দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি দূতাবাস, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের। রাজনৈতিক দলের জন্য এ ধরনের অনুমতি খুব কমই দেওয়া হয়েছে অতীতে।
রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) সূত্রে জানা যায়, সাধারণত জাপান, কানাডা ও জার্মানি বুলেটপ্রুফ গাড়ি তৈরি করে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য গত শতকের নব্বইয়ের দশকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি আনা হয়েছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর তার জন্য আরেকবার বুলেটপ্রুফ গাড়ি আমদানি করা হয়।
সাধারণত বেসরকারিভাবে কেউ বুলেটপ্রুফ গাড়ি আমদানি করতে পারেন না। সরকারিভাবে আনা হয় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কারো ব্যবহারের জন্য। জাপান, কানাডা ও জার্মানি থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি আনা হয়। বুলেটপ্রুফ গাড়ি কিনতে খরচ হয় ২ লাখ ডলার (ডলারপ্রতি ১২২ টাকা হিসেবে ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা)। ৮০০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আনতে গেলে খরচ পড়বে প্রায় ২২ কোটি টাকা।
এএইচ