এক মাস ধরে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা বর্ষা-মাহিরের: পুলিশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:২০ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেনকে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন আটক ছাত্রী বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির। এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয় এক মাস আগে। এ জন্য নতুন দুইটা সুইচ গিয়ার কিনে তারা।
বর্ষা ও মাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, অভিযুক্ত ওই ছাত্রী ও মাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত হন তারা।
ওসি বলেন, ‘এটা বর্ষা ও মাহিরের পরিকল্পিত হত্যা। বর্ষার সাথে মাহিরের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মাঝে আবার বর্ষা জোবায়েদের উপর দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় বর্ষা মাহিরকে না করে দেয় এবং সে জোবায়েদেকে পছন্দ করে বলে জানায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই তার বয়ফ্রেন্ড মাহিরকে জানায় যে, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। তখন জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বর্ষা ও মাহির।’
বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা স্বীকার করেনি বর্ষা। পরে মাহির ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে সত্যতা জানায় সে। জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা করেন তারা।’
‘এরপরই ২৫ সেপ্টেম্বর তারা দুটি সুইচগিয়ার ক্রয় করে হত্যার প্রস্তুতি নেন। পরিকল্পনা ছিল, দুই দিক থেকে আক্রমণ করে জোবায়েদকে হত্যা করা।’
এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি রফিসকুল ইসলাম।
ওসি আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী, রোববার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার আগে টিউশনিতে যাওয়ার সময় আরমানিটোলার নুরবক্স রোডের রৌশান ভিলার নিচে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন মাহির। এ সময় তার সঙ্গে ছিল বন্ধু ফারদিন আহম্মেদ আয়লান। জোবায়েদের অবস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করেন ওই ছাত্রী।
জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষাকে ফিজিক্স কেমেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।
রোববার বিকেল ৪টার ৪৫ মিনিটের দিকে বর্ষার বাসার তিন তলায় উঠার সময় সিঁড়িতে তিনি খুন হন। বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সে রাতেই পুলিশ ওই মেয়েকে হেফাজতে নেয়। পরদিন প্রধান আসামি মাহির রহমান ও তার সহযোগী ফারদিন আহম্মেদ আয়লানকেও গ্রেফতার করা হয়।
এএইচ