বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘নিখোঁজ’ সেই কর্মকর্তা মাদারীপুর থেকে উদ্ধার
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:৩৯ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২৫ বুধবার | আপডেট: ১১:২৩ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২৫ বুধবার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘নিখোঁজ’ উপ-পরিচালক সৈয়দ নাঈম রহমানের খোঁজ মিলেছে। মাদারীপুরের এক হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার অভিযানে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর সদর থানার পুলিশ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমুর রহমান সরকার। ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উপ-পরিচালক নিখোঁজ ছিলেন। তথ্যের ভিত্তিতে মাদারীপুরের একটি হোটেলে অবস্থান করছে বলে খবর পাই। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তিনি থানা হেফাজতে আছেন।”
এর আগে গত রোববার দুপুরে তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে পরিবার ও সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ওইদিন এ বিষয়ে ঢাকার মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁর মা সাজ্জাদা রহমান জলি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা নাঈম রহমানের ‘নিখোঁজের’ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন। তাঁর মায়ের সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে পুলিশ তার নাম্বার ট্র্যাকিং করতে থাকে।
জানা গেছে, মাদারীপুরের একটি হোটেলে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পুলিশ তার নাম্বার ট্র্যাকিং করে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে আসছিল। মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুরে তার অবস্থান শনাক্ত হয়। এরপর রাতে একটি হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
রয়েল রেস্ট হাউসের ম্যানেজার নটরাজ সরকার জানান, “তিনি একদিন আগে চাকরির সন্ধানে এসেছেন বলে পরিচয় দেন এবং আমাদের হোটেলে অবস্থান করছিলেন। পরে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট এসে তাকে নিয়ে যায়।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাদারীপুর সদর থানার ওসি আদিল হোসেন জানান, সংশ্লিষ্ট থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তাকে সেই থানায় হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ নিজে ফেসবুকে তাকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি পুলিশ ও মাদারীপুর প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
রোববার নাঈমের মা যে সাধারণ ডায়েরি করেন সেখানে উল্লেখ করেন, গত ৯ নভেম্বর আমার ছেলে উত্তর পীরেরবাগের নিজ বাসা থেকে সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তার ‘নিখোঁজের’ পর বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল, রোববার সকালে তিনি অফিসে আসেন। দুপুর ১২টার পর নিজের ব্যাগ ও আইডি কার্ড রেখে বেরিয়ে যান। এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দুপুর ১২টা ৫৩ মিনিটে এক সহকর্মীকে শেষবারের মতো একটি এসএমএস দেন।
সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার আর্থিক অবস্থার জন্য আমি মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি। অফিসেও কয়েকজনের কাছ থেকে ধার নিয়েছি, কিন্তু এখন দিতে পারছি না। মুখ দেখানোর মতো অবস্থা নেই।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘পারলে আমার ছোট বোনটার জন্য একটা চাকরি জোগাড় করে দিবেন। না হলে আমার পরিবার চলতে পারবে না। ভাই হিসেবে এটা আমার শেষ অনুরোধ... পারলে একটু দেখবেন। আমার স্ত্রী ও তার পরিবার ভালো অবস্থায় আছে। তাই আমার স্ত্রী ও সন্তান ভালোই থাকবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আমার মা আর ছোট বোন আমাকে ছাড়া অসহায় হয়ে যাবে।’
এএইচ
