পুরান ঢাকায় মামুন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ ৫ জন সীমান্তে গ্রেপ্তার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫৯ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২৫ বুধবার
রাজধানীর পুরান ঢাকায় তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে তাদের সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুই শুটার রয়েছেন, তারা ভাড়াটে হিসেবে মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এ বিষয়টি নিশ্চিত ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, “রাজধানীর সূত্রাপুরে চাঞ্চল্যকর মামুন হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি পিস্তল উদ্ধার এবং দুই শুটারসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আগামীকাল (বুধবার ১২ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।”
পুলিশের (ডিবি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার দুই ‘শুটার’ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
গ্রেপ্তার দুই শুটার হলেন- ফারুক ও রবিন। এ ছাড়া, ঘটনাস্থলে তাদের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে থাকা রুবেল নামে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকি দুইজনের নাম জানা যায়নি।
এর আগে সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনে মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। আদালতে হাজিরা শেষে ফেরার পথে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে মামুন দৌড়ে হাসপাতালের ফটকের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন, পেছন থেকে দুই অস্ত্রধারী তার দিকে গুলি ছুড়ছে। মুহূর্তের মধ্যে দুজন খুব কাছ থেকে একযোগে একাধিক গুলি ছোড়ে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হত্যা মিশন শেষ করে তারা কোমরে অস্ত্র গুঁজে দ্রুত গেটের বাঁ দিকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যে এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সন্ত্রাসীদের কয়েকজনকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে রনি ওরফে ভাইগ্না রনি, ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক, কামাল, জসিম, ইসহাক, রয়েল, ইব্রাহীম ও রুবেল অন্যতম।
এদের কেউ সরাসরি গুলি করেছেন, আবার কেউ সহযোগী হিসেবে ছিলেন।
নিহত মামুনের সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা যায়, মামুনের শরীরে মোট সাতটি গুলির চিহ্ন ছিল—মাথার নিচে একটি, বাম পিঠে একটি, বুকের ডান পাশে একটি, বাম কব্জিতে একটি এবং ডান কব্জির ওপরে একটি গুলি লাগে।
পুলিশ জানায়, নিহত তারিক সাইফ মামুন রাজধানীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন। তিনি ‘ইমন-মামুন গ্রুপের’ অন্যতম প্রধান ছিলেন। একসময় তিনি কুখ্যাত সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন। অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইমন ও মামুনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
নিহত মামুনের পরিবার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ হত্যাকাণ্ডে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে সন্দেহ করে বলে গণমাধ্যমকে বলেছিল।
এএইচ
