উড়োজাহাজের টিকিটে কারসাজি করলে জেল-জরিমানা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৪৮ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রিতে কারসাজি, দুর্বৃত্তায়ন ও প্রতারণা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। এখন থেকে টিকিটসংক্রান্ত প্রতারণা বা যাত্রী হয়রানির অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।
এ-সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ –‘বেসামরিক বিমান চলাচল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ ও ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’–উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এই তথ্য জানান।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, টিকিট বিক্রিতে অবৈধ লেনদেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, কৃত্রিম সংকট তৈরি, অনুমোদনহীন বুকিং বা টিকিট পরিবর্তনের মতো ১১টি অপরাধে ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত হতে পারে।
এ ছাড়া প্রতারণা বা আর্থিক আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর সাময়িক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা যাবে।
সব ট্রাভেল এজেন্সিকে এখন থেকে এয়ারলাইনস টিকিটে মূল্য উল্লেখ করতে হবে, না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা।
বশিরউদ্দীন বলেন, “বিমান খাতের ৮০ শতাংশ যাত্রীই অভিবাসী কর্মী। নতুন আইন তাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষা করবে এবং টিকিট বিক্রিতে স্বচ্ছতা আনবে।”
তিনি জানান, অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের ৩০-৪০ হাজার টাকার টিকিট ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। “এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা বেশি নিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়েছে।”
গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (জিডিএস) ও এপিআই–ভিত্তিক ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো আইনে যুক্ত হয়েছে ‘যাত্রী সেবা নিশ্চিতকরণ’শব্দগুচ্ছ এবং পরিবেশবান্ধব বিমান চলাচলের জন্য কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস ও টেকসই জ্বালানি ব্যবহারের বিধান।
নতুন বিধানে সরকারকে কোনো ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ‘বেসামরিক বিমান চলাচল অর্থনৈতিক কমিশন’গঠনের ক্ষমতা এবং সাইবার সুরক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের বিধান রাখা হয়েছে।
জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগ ঐচ্ছিক করার সিদ্ধান্তে কর্মসংস্থান কমবে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করলেও উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন বলেছেন, “দেশে ৩২টি এয়ার অপারেটর কার্যক্রম চালায়, তাই এই দাবি ভিত্তিহীন।”
টিকিট বিক্রির অনিয়ম ঠেকাতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি, মন্ত্রণালয় ও ভ্রাম্যমাণ আদালত একযোগে কাজ করবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, অতিরিক্ত সচিব ফারহিম ভীমা এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমআর//
