নিরাপত্তাসহ বিচারকদের ২ দাবি,না মানলে কলম বিরতির হুঁশিয়ারি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩৪ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ শুক্রবার
দেশের সব আদালত, বিচারকের বাসস্থান ও যাতায়াতের সময় অবিলম্বে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী নিযুক্তসহ দুই দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরেকটি দাবির বিষয়ে বলা হয়েছে, রাজশাহীর ঘটনায় বিচারকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবহেলার সাথে সম্পৃক্ত এবং গ্রেপ্তার করা আসামিকে আইন বহির্ভূতভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে অপেশাদারিত্ব প্রদর্শনের দায়ে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিচারকদের কাজের পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ এই দুই দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে রোববার থেকে সারাদেশের বিচারকেরা কলম বিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রাজশাহীতে বিচারকের ছেলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাজশাহীর মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসভবনে দুর্বৃত্তের নৃশংস ছুরিকাঘাতে পুত্র তাওসিফ রহমান সুমন নিহত এবং স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতর আহত হয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশন এই বর্বরোচিত ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের শিকার তাওসিফ রহমান সুমনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
“প্রকাশ্য দিবালোকে বিচারক পরিবারে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুরো বিচার বিভাগ আজ স্তম্ভিত ও বাকরুদ্ধ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারাদেশের বিচারকেরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।”
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের প্রত্যেক আদালতও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন ও গাড়িতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বারবার চিঠি দেয়।
তা সত্ত্বেও সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিচার বিভাগের সদস্যরা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও তারা ও তাদের পরিবার অরক্ষিত ও নিরাপত্তাহীন। জেলা পর্যায়ের প্রত্যেক বিচারকের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থা নেই।
চৌকি আদালতে কর্মরত বিচারকদের অবস্থা আরো শোচনীয়। ফলে বিচারকদের বাধ্য হয়ে অরক্ষিত বাসায় ভাড়া থাকতে হয়, রিকশা-ভ্যানে করে এমনকি পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করতে হয়।
“বিচার বিভাগের প্রতি এই উদাসীনতা ও চরম গাফিলতির বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা সোচ্চার থাকলেও রাষ্ট্র কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যার পরিণতিতে আজ বিচারক পরিবারে এ করুণ বিপর্যয় নেমে আসে। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় বিচারকেরা সর্বদা নিয়োজিত থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এই রক্তের দায় কোনোভাবে এড়ানোর সুযোগ নেই।”
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে রাজশাহী মহানগর ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তাওসিফ রহমান সুমনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীকে (৪৪) কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় লিমন মিয়া (৩৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এমআর//
