পাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানে অন্তত নিহত ১০
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৪১ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।
মঙ্গলবার তালেবান সরকারের মুখপাত্র এ তথ্য জানান। কাবুল থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের পেশাওয়ার শহরের নিরাপত্তা চৌকিতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের একদিন পর এ ঘটনা ঘটে।
তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের আগ্রাসী বাহিনী খোস্ত প্রদেশের এক বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে নয় শিশু (পাঁচ ছেলে, চার মেয়ে) ও এক নারী শহীদ হয়েছেন।
সীমান্তবর্তী কুনার ও পাকতিকা প্রদেশে দুদফা বিমান হামলায় আরও চারজন আফগান নাগরিক আহত হন।
যদিও পাকিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত হামলার বিষয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি।
এর আগে পর পেশাওয়ারের আধা-সামরিক বাহিনী ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারির সদর দফতরে আত্মঘাতী হামলায় তিন কর্মকর্তা নিহত এবং ১১ জন আহত হয়। কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি।
তবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় চ্যানেল পিটিভি জানিয়েছে, হামলাকারীরা আফগান নাগরিক।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট আসিফ জারদারির হামলার দায় চাপিয়েছেন ‘বিদেশি সমর্থনপুষ্ট ফিতনা আল-খাওয়ারিজ’-এর ওপর। ইসলামাবাদে এই নামের মাধ্যমে তেহরীক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা (টিটিপি) কে বোঝানো হয়।
পাকিস্তান সরকারে ধারণা, ওই গোষ্ঠী আফগানিস্তানের মাটিতে অবস্থান করে এবং সেখান থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হামলা বা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
চলতি মাসে ইসলামাবাদে আরেকটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত হন। সেসময় পাকিস্তান তালেবানে একাংশ ওই হামলার দায় স্বীকার করে। তারা মূলত আফগান তালেবানের মতই কাজ করে।
ইসলামাবাদের ধারণা, এই হামলা চালানোর পেছনে একটি সশস্ত্র সেল রয়েছে এবং তারা আফগানিস্তানে থাকা শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে কাজটি করেছে।
তালেবানরা ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। গত অক্টোবরের সীমান্ত সংঘর্ষে দুদেশের প্রায় ৭০ জন নিহত হয়। এরপর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হলেও ইস্তানবুলে আলোচনায় চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। নিরাপত্তা বিষয়ে পাকিস্তানের অভিযোগ, কাবুল টিটিপি যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এ বিষয়ে বিতর্ক হয়েছে।
পাকিস্তানের আরও অভিযোগ করে, তালেবান সরকার বিশেষ করে টিটিপির মত বিদ্রোহীদের আশ্রয় দিচ্ছে। সংগঠনটি বছরের পর বছর পাকিস্তানে রক্তক্ষয়ী হামলা চালাচ্ছে।
তবে কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা পাল্টা অভিযোগ করেছে যে, পাকিস্তান আফগানিস্তানের শত্রু গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছে এবং দেশটির সার্বভৌমত্ব মানছে না।
এদিকে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের সংগঠন পাকিস্তান-আফগানিস্তান জয়েন্ট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি সতর্ক করেছে যে এ সপ্তাহে সীমান্তে হাজার হাজার কনটেইনার আটকা পড়েছে। প্রতিটি কনটেইনারের জন্য দৈনিক ১৫০-২০০ ডলার চার্জ দিতে হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে এটিকে “অসহনীয়” বলে মন্তব্য করেছে চেম্বার।
এএইচ
