রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৪৮ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
রাজশাহীতে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মশালমিছিলে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাধারণ পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন ও মনোনয়ন বঞ্চিত বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, শরীফ উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সন্ধ্যায় উপজেলা সদরে মিনি স্টেডিয়াম মাঠ থেকে মশাল মিছিল বের করেন সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা। মিছিল নিয়ে তারা থানার মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় সামনে থেকে শরীফ উদ্দিনের অনুসারীরা হামলা চালিয়ে ইট-পাটকেল ছুড়েন। এ সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, ‘‘তারা দল করে, আমরাও দল করি। প্রার্থী পছন্দ না হলে সারাদেশেই বিক্ষোভ হচ্ছে, আমাদের এখানেও হচ্ছে। আমার অনুসারীরাও সন্ধ্যায় প্রার্থী বদলের দাবিতে মশাল মিছিল বের করে। এতে শরীফ উদ্দিনের অনুসারীরা হামলা করে।’’
তারেক আরও বলেন, ‘‘শরীফ উদ্দিন তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিজানকে নির্দেশ দিয়েছেন এলাকায় যেন কোনো বিক্ষোভ না হয়। তাই মিজান নিজে তার লোকজন নিয়ে এ হামলা করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেওয়াসহ জখম করেছে। আমরা এ ব্যাপারে অবশ্যই থানায় অভিযোগ দায়ের করব।’’
তিনি অভিযোগ করেন, তাদের নেতাকর্মীদের বহনকারী অন্তত ১৮টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব অটোরিকশায় চড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরে গিয়েছিলেন। গাড়িগুলো ভাঙচুরের পর চাবি নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছে।
এছাড়াও হামলার সময় তাদের কিছু লোকজন ভূমি অফিসে আশ্রায় নিয়েছিল। সেখানেও তারা হামলা চালায়। এ সময় তারা ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার গাড়িও ভাঙচুর করে বলেও জানান সুলতানুল ইসলাম তারেক।
তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘‘তারা হামলা করেননি বাঁধা দিয়েছেন। মিছিল থেকে তার কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় বেশ কিছু কর্মী আহত হয়েছেন।’’
এবিষয়ে কথা বলতে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী শরীফ উদ্দীনকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘‘বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর্জা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে যে কেউ মিছিল-মিটিং করতেই পারে। তাতে কারও বাঁধা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তবে তানোরে মিছিলে বাঁধা দেওয়া কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’’
এমআর//
