ঢাকা, বুধবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫,   পৌষ ৯ ১৪৩২

গরু চুরিতে বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৩

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৩৫ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

নেত্রকোণায় শোবার ঘরের বিছানা থেকে কৃষক হেলাল উদ্দিনের (৫৮) হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। একটি ষাঁড় গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেওয়ায় হেলাল উদ্দিনকে তার স্ত্রী বেদেনা আক্তারের (৪০) সহায়তায় তিনজন মিলে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, সোমবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হওয়া বেদেনা আক্তার আদালতে বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিহত হেলাল উদ্দিন সদর উপজেলার নারিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন।

এলাকাবাসী, নিহত ব্যক্তির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে খাবার খেয়ে হেলাল উদ্দিন শুয়ে পড়েন। ঘরটির একটি বিছানায় তিনি একা ছিলেন। অন্য বিছানায় স্ত্রী বেদেনা আক্তার তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে ঘুমান। পরদিন রোববার ভোরে বেদনা বাড়ির লোকজনকে জানান ভোর আনুমানিক সোয়া চারটার দিকে তিনি টয়লেটে যান। কিছুক্ষণ পর ঘরে ফিরে স্বামীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। 

পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধারসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্ত্রীকে আটক করে।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ আটক করা বেদনা আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আমলি আদালতে হাজির করে। সেখানে বিচারকের কাছে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। 

নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক চম্পক দাম জানান, আদালতে বেদেনা আক্তার জবানবন্দিতে বলেছেন তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ করেছেন। পাওনাদাররা এখন টাকার জন্য তাগদা দিচ্ছেন। তাই তার বাবার বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়ার (৫০) সঙ্গে চুক্তি করেন চুরি করে তার স্বামীর হেলাল উদ্দিনের ষাঁড় গরুটির নিয়ে বিক্রি করার জন্য। শনিবার রাতে লিটন মিয়া নারিয়াপাড়া গ্রামের রিয়েল মিয়াসহ চারজন মিলে গরু চুরি করতে গেলে হেলাল উদ্দিন টের পেয়ে যান। 

তিনি এতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ, হাত-পা বেধে জবাই করে হত্যা করে। 

পুলিশ কর্মকর্তা চম্পক বলেন, বেদেনা আক্তারের তথ্য অনুযায়ী সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে লিটন মিয়া ও রিয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এএইচ