ঢাকা, রবিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫,   পৌষ ১৪ ১৪৩২

মান্নার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই: রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:২৫ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ রবিবার

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ঋণখেলাপি হিসেবেই বহাল থাকছেন। ফলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল ১২ এর দফা (১) ও উপ দফা (ঠ) অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের পূর্বের দিন পর্যন্ত ঋণখেলাপি হিসাবে বহাল থাকায় তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে বিচারপতি রেজাউল হকের চেম্বারে মাহমুদুর রহমান মান্নার আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য ২৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। এতে করে মনোনয়ন দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত তিনি ঋণখেলাপি হিসেবে বহাল থাকায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আইনি সুযোগ আর থাকছে না।

শুনানিতে মান্নার পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ব্যারিস্টার আহসানুল করিম, অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক সুমন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. উজ্জ্বল হোসাইন।

শুনানি শেষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. উজ্জ্বল হোসাইন বলেন, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত কেউ ঋণখেলাপি থাকলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। চেম্বার জজ আদালত কোনো আদেশ না দিয়ে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করায় মাহমুদুর রহমান মান্না ঋণখেলাপি হিসেবেই বহাল থাকলেন। ফলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো আইনগত সুযোগ নেই।

এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদনে নথিপত্র জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় ইসলামী ব্যাংক মান্নার আগের দেওয়া স্যাংশন লেটার বাতিল করে দেয়। এতে তার ঋণসংক্রান্ত জটিলতা আরও বেড়ে যায়।

এরও আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার করা রিট আবেদন হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায়। বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রিট আবেদনটি খারিজ করেন।

যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার জন্য বগুড়া ২ আসন ছেড়ে দিয়েছিল। মান্না দলীয় প্রতীক কেটলি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এদিকে শনিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মান্না ঋণসংক্রান্ত জটিলতা তুলে ধরে আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানান।

সেখানে তিনি বলেন, ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালের দিকে নিজ এলাকায় ঋণ নিয়ে একটি হিমাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০১৪ সালে রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি ব্যবসা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

তিনি জানান, শুরুতে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তার ব্যবসায়িক অংশীদারের বিরুদ্ধে হত্যা ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হওয়ায় তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করা না গেলে ঋণখেলাপি পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন মান্না।

তিনি আরও বলেন, আদালতের রায় তার পক্ষে না এলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না। যারা তাকে বিশ্বাস করেন, তাদের সহযোগিতায় নির্বাচন করতে চান বলেও জানান তিনি।

এমআর//