ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২০ ১৪৩১

ভোটার হালনাগাদ : বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু

প্রকাশিত : ০৬:৪২ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:৩৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষে মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা চার নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে ময়মনসিংহের টাউনহলের তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল ১১টায় ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্ জানান, মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। এতে প্রায় ৩৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হবে এবং যেসব নাগরিক যোগ্য হওয়ার পরও বিভিন্ন কারণে ভোটার হতে পারেননি কেবল তাদের ভোটার করা হবে। এ ধাপে ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি মৃত ভোটরারে তথ্যও সংগ্রহ করে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানান ইসি সচিব।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য হালনাগাদের সময় নাম সংশোধন বা ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, ১৩ নম্বর ফরম পূরণ করে ভোটার এলাকা স্থানানান্তর করা যাবে। তথ্য হালনাগাদে নাম সংশোধনের বিষয়টি রাখা হয়নি। নাম বা অন্য যেকোনো সংশোধনের জন্য যেকোনো দিন নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। আর এটা সারাবছরই করা যাবে।

ইসি সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত চার জেলার ৩০টি উপজেলায় এবা বিশেষ নজর দেওয়া হবে।  এসব এলাকায় ভোটার হতে হলে চাচা বা ফুপুর এনআইডি দেখাতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার নিবন্ধন নিতে না পারে সেজন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় ইসি।

এসব বিশেষ এলাকার মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার জেলার ৮টি, বান্দরবানের ৭টি, রাঙামাটির ৮ ও চট্টগ্রামের ৭টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হলো— কক্সবাজার সদর, চকোরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া, বান্দরবান সদর, রুমা, থানচি, বোয়াংছড়ি, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি, রাঙামাটি সদর, লংগদু, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল এবং চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগড়া ও বাঁশখালী।

এ ছাড়া ১৯ জেলার ৬৫ উপজেলাকে দুর্গম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন।

সূত্র জানায়, দেশব্যাপী ২০০৭/২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটারদের তালিকা প্রণয়নের পর ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। ১০ কোটি ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬৭ জন ভোটার নিয়ে চলতি বছরের (২০১৭) ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এর আগে ২০১৫ সালের হালনাগাদ কার্যক্রমে তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়া হয়েছিল, যেখানে ভোটার যোগ্য নাগরিকদের সংখ্যা বিদ্যামান ভোটারের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। বাস্তবে দেখা যায়, ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ নিবন্ধিত হয়েছিল। ২০১৭ সালের হালনাগাদ কার্যক্রমে বাদপড়া ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ (প্রায় ৩৫ লাখ) নতুন ভোটারকে নিবন্ধিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।

আগামী ৯ আগষ্ট তথ্য সংগ্রহ শেষ হবে। নিবন্ধন কেন্দ্রে সংগৃহীত তথ্যাদি সংযোজনের জন্য আগামী ২০ আগষ্ট  কম্পিউটার ডাটা এন্ট্রির কাজ ৩ ধাপে শুরু  করা হবে। প্রথম ধাপে ১৮৩টি উপজেলায় ২২ দিনে, দ্বিতীয় ধাপে ২১৬টি উপজেলায় ২৮ দিনে, তৃতীয় ধাপে ১১৮টি উপজেলায় ২১ দিনে, মোট ৫১৭টি উপজেলায় তথ্য সংযোজনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। এটি শেষ হবে ৫ নভেম্বর। ২৫ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপজেলা থানা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন গ্রহণ, মৃত ভোটারের নাম কর্তন করা যাবে।

২ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। দাবি আপত্তি ও সংশোধনের জন্য দরখাস্ত দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ জানুয়ারি। দাবি আপত্তি ও সংশোধন নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ২২ জানুয়ারি।

দাবি, আপত্তি ও সংশোধনীর জন্য দাখিল করা দরখাস্তের ওপর গৃহীত সিদ্ধান্ত সন্নিবেশনের শেষ তারিখ ২৭ জানুয়ারি। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩১ জানুয়ারি।

ডব্লিউএন