‘মানব পাচারে প্রভাবশালীরা জড়িত’
প্রকাশিত : ০৬:৫১ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ১০:৪৯ এএম, ৩০ জুলাই ২০১৭ রবিবার

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মানব পাচারের সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক পরামর্শ সভায় রিয়াজুল হক এ কথা বলেন।
আগামীকাল রোববার আন্তর্জাতিক মানব পাচারবিরোধী দিবস উপলক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ওই পরামর্শ সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহ্। অন্যদের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শাহ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পাচারকারীদের ‘গডফাদারদের’ তালিকা করে তাঁদের ধরার দাবি জানিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ২০১২ সালে মানব পাচার প্রতিরোধে চমৎকার একটি আইন হয়েছে। একই সময়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনও হয়েছে। কিন্তু এসব আইনের বাস্তব প্রয়োগ কতটা করা যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। পুলিশের তথ্য আনুযায়ী, মানব পাচারের সাড়ে ৩ হাজার মামলার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ জনের যাবজ্জীবন শাস্তি হয়েছে। এটা সে রকম বড় শাস্তি হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না।
মানব পাচার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনের বিষয়ে রিয়াজুল হক বলেন, তাদের প্রতিবেদন নিয়ে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কিছু যেমন নেই, তেমনি তা উড়িয়েও দেওয়া যায় না। নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ইউরোপে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বাংলাদেশির সংখ্যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে গত এপ্রিলে ঢাকা সফরকারী ইইউ প্রতিনিধিদল ইউরোপে ৮০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশির উপস্থিতির কথা বলেছিল। ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮-১৫ সাল পর্যন্ত আট বছরে ৯৩ হাজার ৪৩৫ জন বাংলাদেশি ইউরোপের দেশগুলোতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন। এই বছরের ছয় মাস ধরলে এই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে মানব পাচার বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, মানব পাচারে দেশে-বিদেশে বড় বড় স্বার্থগোষ্ঠী অনেক ক্ষমতাধর। মূল হোতাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে এটা কমানো সম্ভব।
আরকে/ডব্লিউএন