ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

চাপ যতই আসুক, নতি স্বীকার করব না : সিইসি

প্রকাশিত : ০৩:০৮ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৩:১৩ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৭ বৃহস্পতিবার

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাজ নয়। ইসি এ উদ্যোগ নেবেও না। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা এসব কথা বলেন। এসময় নুরুল হুদা বলেন, তাঁরা তাঁদের নেওয়া শপথ দৃঢ়ভাবে পালন করবেন। যত চাপ আসুক, নতি স্বীকার করবেন না।


রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনতে ইসি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে না জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা যে ডায়ালগ করব পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে, সেটাও শুধু ডায়ালগ। তাদের কথা শুনব আর আমাদের কথা তারা শুনবে। এ নিয়ে কে আসবে, না আসবে এ ব্যাপারে আমাদের কোনো ইস্যু থাকবে না।’


এ ছাড়া নির্বাচনকালীন পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি। নির্বাচন কমিশন যদি প্রয়োজন মনে করে, তাহলেই কেবল সেনা মোতায়েন করা হবে বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, কে চাইবে না চাইবে, তার ওপর নির্ভর হবে না। আমরা পরিবেশ-পরিস্থিতি যদি মনে করি, আমরা তখন দরকার মনে করি, সেনাবাহিনী আসবে এবং যদি দরকার মনে না করি, সেনাবাহিনী আসবে না। সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শুরু হয়। শেষ হয় বেলা পৌনে একটায়। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।


আজকের সংলাপে টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের মোট ৩৪ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি।


গতকাল বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসির প্রথম দিনের সংলাপ হয়। এদিন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ইসি। সংলাপে আমন্ত্রিত ৩৬ জনের মধ্যে অংশ নেন ২৬ জন।


এদিকে সংলাপে অংশ নেওয়া গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনের তাগিদ দিয়েছেন। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের কেউ কেউ `না` ভোটের বিধান চালুর আহ্বান জানান। এছাড়া ভোট কারচুপি, জালভোট ঠেকাতে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে নজরদারির পরামর্শ দেন অনেকে।

সংলাপ শেষে বেরিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মঞ্জুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের তিন ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষ হলো। মূলত প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশন আমাদের ডেকেছিলেন গণমাধ্যমের বিভিন্ন যাঁরা ব্যক্তি আছেন, তাঁদের কাছ থেকে শোনার জন্য। মূলত জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা মনে করেন যে আমরা জনগণের কাছাকাছি কাজ করি। ফলে জনগণ কী রকম নির্বাচন চায়, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য কী কী করা দরকার এ বিষয়গুলো তাঁরা শুনতে চেয়েছেন। আমরা মূলত যেটা বলেছি যে, সাংবাদিকরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের সংবাদ প্রচারের জন্য কী কী করা যায়।


বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসির সংলাপে অংশ নেন ২৬ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতা। এ সময় তাঁরা সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেন।

ইসির আজকের সংলাপে আমন্ত্রিত ছিলেন- বাসসের প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক খায়রুল আনোয়ার, একুশে টিভির হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ জ ই মামুন, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ, আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান,  বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ মোস্তফা ফিরোজ, সময় টিভির বার্তা প্রধান তুষার আবদুল্লাহ, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির নির্বাহী সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন, মাছরাঙা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক রেজোয়ানুল হক রাজা, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, চ্যানেল ২৪ এর এডিটর ইনপুট তালাত মামুন, যমুনা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ফাহিম আহমেদ, ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম, মোহনা টিভির বার্তা সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান, এসএ টিভির বার্তা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, দীপ্ত টিভির বার্তা সম্পাদক মাহমুদুল করিম চঞ্চল, এশিয়ান টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক বিল্লাল হোসাইন বেলাল,  রেডিও টুডে’র বার্তা প্রধান সেলিম বাশার, ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাদেশ প্রতিনিধি আমির খসরু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-উর-রশীদ প্রমুখ।

 //এআর