ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

গার্ডিয়ানের বিশেষ রিপোর্ট

রোহিঙ্গা সঙ্কটে নীরব কেন সু চি?

প্রকাশিত : ০৫:৪২ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ০৬:১১ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বুধবার

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ,তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চলছে। নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বহু রোহিঙ্গা শরনার্থী পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তাদের এ অবস্থা দেখে বিশ্ববাসী দু:খ প্রকাশ করছে। অনেকেই এ অমানবিক অবস্থার অবসান চেয়েছে এবং তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন।


কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলেও সত্যি যে, শান্তিতে নোবেল জয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের ব্যপারে নীরব রয়েছেন। সেজন্য অনেকেই সু চির নোবেল কেড়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে অত্যন্ত সাবধানতা আবলম্বন করছেন সু চি। রোহিঙ্গাদের জন্য দেশটিতে জনগণের সহানুভূতি একেবারেই তলানিতে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয় বলে সরকারের যে দৃষ্ঠিভঙ্গি আছে, অধিকাংশ বার্মিজ জনগনের মতও তাই।


এমনকি কয়েক প্রজন্ম ধরে এই রোহিঙ্গাদের অনেকেই দেশটিতে বসবাস করে এলেও অনেকেই তাদেরকে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী মনে করে। গত বছরের অক্টোবরে এবং গত আগস্টে পুলিশের পোস্টে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) বিদ্রোহিদের হামলার পর এই দ্বন্ধ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাখাইন রাজ্যে স্থানীয় বৌদ্ধরা আরো প্রতিকূলতায় রয়েছেন। কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাদের সংঘাত চলে আসছে। রোহিঙ্গাদেরকে বাঙালি হিসেবে দাবি করে বৌদ্ধরা।


রাখাইনের অনেক বৌদ্ধে বিশ্বাস, তারা শেষ পর্যন্ত সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন। এমনকি তাদের পরিচয় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলেও শঙ্কা করছে তারা । রাখাইন জাতীয়তাবাদী পার্টি এএনপি স্থানীয় বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। বৌদ্ধদের জন্য দেশটির আইনশৃংখলা বাহিনীরও সহানুভূতি রয়েছে। পুলিশের প্রায় অর্ধেক কর্মকর্তাই রাখাইনের বৌদ্ধ। তবে বাংলাদেশ সীমান্তের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যের আসল ক্ষমতায় সেনাবাহিনী। এই রাজ্যে প্রবেশ অত্যন্ত সীমিত এবং নিয়ন্ত্রিত।দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এটা পরিষ্কার করেছেন যে, রোহিঙ্গাদের জন্য তার সহানুভূতি নেই।


এমতাবস্থায় সু চি তাদের দেশের সেনাবাহিনী এবং জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে বাধ্য বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পর্যতবেক্ষকরা। তাই রোহিঙ্গা মুসলিমদের ব্যপারে সু চি নিরব রয়েছেন।
তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
//এম//এআর