ঢাকা, শনিবার   ০৫ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২০ ১৪৩২

‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে মিয়ানমারের বিচার হতে হবে’

প্রকাশিত : ০৪:৪৫ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:১২ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৭ বৃহস্পতিবার

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা চালিয়ে মিয়ানমার মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। এজন্য মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের বিচার হতে হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী রিয়াজুল হক রাজধানীতে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার ‍দুপুরে হোটেল সোনাগাঁওয়ে ‘রোহিঙ্গা ক্রাইসিস : কল ফর অ্যাকশন’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক হয়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত এ বৈঠকে সাবেক ও বর্তমান কুটনীতিক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, মিয়ানমারের সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট আমাদের জন্য এক বিষফোঁড়া। মিয়ানমার শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই হুমকি স্বরূপ। সামরিক বাহিনী যেভাবে গণহত্যা, ধর্ষণ ও রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে তার বিচার হওয়া দরকার। বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তাদেরকে ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে মুসলমানদের ২৮৮ গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। ‍এর সবগুলো রোহিঙ্গাদের। আর বৌদ্ধ ও অন্যান্যদের বাড়িঘর অক্ষত রয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে. মিয়ানমার সরকার যা করেছে তা পরিকল্পিত ভাবেই করছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী, ইয়াবা-ব্যবসায়ী-এ জাতীয় তকমা দেওয়া যাবে না। এতে তারা আরও ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে। খাদ্য ও বাসস্থানের পাশাপাশি শিক্ষার ব্যবস্থাও করতে হবে।

ইউএনডিপির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর শায়লা খান বলেন, মিয়ানমার সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা দরকার। এজন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও বিশেষ ব্যক্তিদের আমরা অডিও-ভিডিও ভিজুয়্যাল দেখিয়ে তাদের কাছে রোহিঙ্গাদের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরছি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যেমন বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরার সাংবাদিকরা যাতে সহজে বাংলাদেশে আসতে পারে সেজন্য আমরা তাদের ভিসা প্রসেসিংসহ সবকিছু সহজ করে দিয়েছি। ঠান্ডা মাথায় আমাদের কাজগুলো করতে হবে-বলেন তিনি।

‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু বলেন, আমরা রোহিঙ্গা শিশুদের বিশেষ করে এতিম শিশুদের নিয়ে কাজ করছি। এমন রোহিঙ্গা শিশু আছে যাদের মা-বাবা দুজনকেই হত্যা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আমরা তাদেরকেও দেখছি।

আলোচনায় আরও অংশ নেন জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএন হাইকমিশন ফর রিফুজি’র পরিদর্শক শিনজি কুবো, মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল  (অব.) অনুপ কুমার চাকমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শবনব আজিজ, কক্সবাজার জেলার এডিসিসহ সাবেক ও বর্তমান কুটনৈতিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

/ এমআর / এআর