এক লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় হচ্ছে ভাসান চরে
প্রকাশিত : ০৬:২১ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার

মিয়ানমার থেকে গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ‘ভাসান চর’ দ্বীপে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে প্রকল্পটি পাস হয়।
বৈঠক শেষে বিষয়টি জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এ অর্থ পুরোটাই সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। এর আগে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি, পরবর্তীতে তারা এ প্রকল্পে যোগ দেবে।
ভাসান চরে পানি ওঠা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। আপাতত এক লাখ লোকের আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর বেশি আমাদের সামর্থ্য নেই।
প্রকল্পের বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় স্থানীয় অধিবাসী রয়েছে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার। কিন্তু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নতুন ও পুরাতন সব মিলিয়ে বর্তমানে ১০ থেকে ১২ লাখ রোহিঙ্গা সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে সামাজিক ও পরিবেশগত নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
তাই প্রাথমিকভাবে অসহায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসান চরে পুনর্বাসন করা হবে। এ জন্য দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। চলতি মাস নভেম্বর থেকে আগামী ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ চলবে; যা বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। বসবাসের জন্য প্রথমে ১২টি গুচ্ছ গ্রাম করা হবে। যেখানে এক হাজার ৪৪০টি ব্র্যাক হাউস ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
উল্লেখ্য, হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে মেঘনা নদীপথ পার হলে ভাসান চরের অবস্থান। বর্তমানে ওই চরটির আয়তন প্রায় ৩৩০ বর্গকিলোমিটার। অর্থাৎ হাতিয়ার মূল ভূখণ্ডের আয়তনের প্রায় সমান। এ ছাড়া দ্বীপটির চতুর্দিকে প্রতি বছর গড়ে ৩৫/৪০ বর্গকিলোমিটার করে ভূমি জেগে উঠছে।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯০ সালের দিকে স্থানীয় জেলেরা এখানে একটি ডুবোচরের অস্তিত্ব খুঁজে পান। পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে ডুবোচরটির আয়তন বৃদ্ধির পাশাপাশি একই সময় দক্ষিণে আরও একটি নতুন চর জেগে ওঠে। স্থানীয় জেলেদের কাছে এটি ‘গাঙ্গুরিয়ার চর’ নামে পরিচিত।
এসএইচ/