ঢাকা, বুধবার   ০৮ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

ভাসান চরে রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে: অ্যামনেস্টি

প্রকাশিত : ০৫:৩৭ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৭ বুধবার

রোহিঙ্গাদের জন্য নোয়াখালীর ভাসান চর দ্বীপে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

মিয়ানমারে পুনর্বাসিত হওয়ার আগ পর্যন্ত নোয়াখালীর ভাসান চরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য অস্থায়ী আবাসস্থল ও দ্বীপটির নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে মঙ্গলবার একনেক সভা হয়। সভায় ২ হাজার ৩১২ কেটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। এ খবরের পরপরই আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভাসান চরকে বসবাসের অনুপযোগী ও বন্যাপ্রবণ এলাকা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এ মানবাধিকার সংস্থা।

অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক বিরাজ পাটনায়েক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, অন্যান্য শরণার্থী ক্যাম্প থেকে বহুদূরে, বন্যাপ্রবণ ও বসবাসের অনুপযোগী একটি দ্বীপে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হলে সেটি হবে একটি ভয়ানক ভুল।

রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক অমানবিক নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণহত্যা চালিয়েছে মিয়ানমার সরকার। রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মুখে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিতও হয়েছে বাংলাদেশ। তবে টেকনাফ ও উখিয়ায় স্থানীয় অধিবাসীদের সংখ্যা ৫ লাখ ৭ হাজার। এমন অবস্থায় নতুন-পুরনো মিলিয়ে জনসংখ্যা দাঁড়ায় দশ থেকে ১২ লাখ। ফলে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি এবং পর্যটন এলাকাটির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে উদ্বেগ রয়েছে।

এসব প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার কাছে ভাসান চরে সরিয়ে নিতে পরিকল্পনা করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু জনমানবহীন এমন দ্বীপে রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে দাবি করছেন অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক বিরাজ পাটনায়েক।

তিনি বলেছেন, গত তিন মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিলেও বাংলাদেশ সরকার এখন তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি ঝুঁকিতে ফেলছে। কারণ জোয়ারের সময় ১০ হাজার এবং ভাটার সময় ১৫ হাজার একর আয়তনের জনমানবহীন ভাসান চর মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ২০১৩ সালে এ চরটিকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দ্বীপটিতে নৌযান ছাড়া যাতায়াতের সুযোগ নেই। হাতিয়া থেকে যেতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। ফলে এ দ্বীপটিতে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হলে তাদের জন্য সেখানে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়টি কঠিন হবে যাবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ যে চুক্তি করেছে সেটিও স্থগিত রাখার দাবি জানান বিরাজ পাটনায়েক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচিত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে ফেরার মতো পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত যে কোনো ধরনের প্রত্যাবাসন চুক্তি স্থগিত রাখা।

একে/ এআর