অধস্তন আদালতে সুশাসন চ্যালেঞ্জে : টিআইবি
প্রকাশিত : ০৬:১৮ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার

অধস্তন আদালতের ওপর একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমানে বিচারকদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়গুলো আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে, যা কিছু ক্ষেত্রে অধস্তন আদালত ব্যবস্থার কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে। ফলে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।
এছাড়া অবকাঠামো, লজিস্টিকস, বাজেট, জনবল, প্রশিক্ষণ ও কার্যকর জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার ঘাটতি, মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থের লেনদেনসহ নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের ফলে অধস্তন আদালত ব্যবস্থায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।
অধস্তন আদালতগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিতকরণে ১৮ দফা সুপারিশ করেছে টিআইবি।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিচালিত ‘বাংলাদেশের অধস্তন আদালত ব্যবস্থা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণার পর্যবেক্ষণে এসব কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
টিআইবি’র এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিতে দেশের আটটি বিভাগের প্রতিটি থেকে দুটি করে মোট ১৬টি জেলা এবং দুটি বিভাগ থেকে বিশেষ বিবেচনায় অতিরিক্ত আরও দুটি জেলা মিলে মোট ১৮টি জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে নিম্ন আদালতের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, আইনজীবীদের সহকারী, জেলা আইনগত সহায়তা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী ও অন্যান্যদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার মাধ্যমে। এছাড়াও আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দলগত আলোচনা করে তৈরি করা হয়েছে।
আলোচনায় প্রতিষ্ঠানিটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জমান জানান, আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের নিম্ন আদালতের ওপর দ্বৈত প্রতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি মামলার দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল জানান, সম্প্রতিক সময়ে সাবেক প্রধান বিচারপ্রতি এস কে সিনহাকে নিয়ে উচ্চ আদালতে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এর প্রভাব নিম্ন আদালতেও পড়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা তাদের সুপারিশগুলো বাস্তবয়নের জন্য সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সরকার ও নাগরিক সমাজকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়েরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এম/এসএইচ