ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনিসুল হককে নিয়ে স্মৃতিচারণ

প্রকাশিত : ১১:৪৯ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ১১:২৫ এএম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭ বুধবার

ক্যাপশন: (ফাইল ফটো সংগৃহীত)

ক্যাপশন: (ফাইল ফটো সংগৃহীত)

বিশ্বায়নের এ যুগে মানুষ তার সুখ-দুঃখ বা আবেগের কথাগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশ করতে বেশি পছন্দ করেন। অনেকেই রাগ-ক্ষোভেরও প্রকাশ ঘটান ফেসবুক বা টুইটারের মাধ্যমে। ব্যক্তিগত কোনো সাফল্য, অর্জন বা প্রিয়জন বিয়োগের কথাও ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে প্রকাশ করেন। তেমনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যু নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও তাদের বেদনা বিধুর অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

‘তার দু`চোখ ভরা স্বপ্ন’ শিরোনামে আনিসুল হককে নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে নিজের আবেগ অনুভূতির কথা প্রকাশ করলেন দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার। তিনি তার ফেসবুক ওয়াল পেইজে লিখেন, “মৃত্যু অমোঘ, অনিবার্য। `আকাশের লক্ষ তারা` জীবনকে প্রতিনিয়ত ডাকছে। এই ডাক অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা কারও নেই। এই নিষ্ঠুর বাস্তবতার মধ্যেই সুখ-দুঃখের ভেলায় জীবননৌকা কখনও শান্ত, কখনও বা ঊর্মিমুখর সাগরে এগিয়ে চলে। নৌকাটি কখন হঠাৎ থেমে যাবে, তা শুধু একজনই জানেন- যিনি অলক্ষ্যে বসে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। এই নিষ্ঠুর বিধাতা বেশ কয়েক মাস আমাদের আশা-নিরাশার দোলাচলে দুলিয়ে প্রিয় আনিসুল হককে কেড়ে নিলেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদা হাস্যমুখ মেয়র আনিসুল হক। `ডিএনসিসির মেয়র`, এ পরিচয় মোটেই মুখ্য নয়- তার বড় পরিচয় তিনি আমাদের লোক। আমাদের অতি প্রিয়জন।”

মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি রাজধানীকে যানজটমুক্ত করার জন্য বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত এই নগর পিতা। তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদের জন্য মেয়রের নেতৃত্বে অভিযানকালে ট্রাকচালক-শ্রমিকদের মুহুর্মুহু ইটপাটকেল বর্ষণে আনিসুল হকের জীবন বিপন্ন হয়েছিল। যথাসময়ে পুলিশ না এলে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। সাতরাস্তা থেকে তেজগাঁও রেলগেট পর্যন্ত সড়কটির নাম ‘আনিসুল হক সড়ক’ করার দাবিও জানান তিনি।

ব্যারিস্টার তানজিম আল ইসলাম তার স্ট্যাটাসে বলেন, ‘২০০৭ সাল মাত্র এলএলএম শেষ করে ঢাকায় আসি টুকটাক লেখালিখি করে পকেট খরচটা জোগার করতাম। থাকতাম নিকুঞ্জে। একটা চাকুরী পাওয়ার খুব চেষ্টা করছিলাম। এক বড় ভাইয়ের রেফারেন্সে নিকুঞ্জ মোহাম্মদী গ্রুপে আনিসুল হকের সাথে দেখা করি। আমার সাথে কথা বলে আনিসুল হক আমাকে বললেন “তোমার মাথায় এখন চাকুরী পাওয়ার চাপ তাই ভাল মন্দ বুঝতে পারবেনা। তুমি চাইলে এখানে জয়েন করতে পার কিন্তু তোমার সামনে আরও সুন্দর পথ রয়েছে। উকালতি কর ভাল করতে পারবে। চিন্তা কর। চিন্তা করে তোমার মন যেটা ভালো মনে করবে তাই কর।” বাসায় এসে চিন্তা করে আর যাইনি চাকুরীতে যোগ দিতে। এই হলেন আনিসুল হক। আমার কোন আত্মীয় নন, আমার কেউ হননা তিনি; কিন্তু টিভিতে আজ তার শেষযাত্রা দেখে নিজের চোখ বার বার ভিজে যাচ্ছে। প্রিয় আনিসুল হক অনেক ভাল থাকবেন।”

এটিএন নিউজের হেড অব নিউজ মুন্নি সাহা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, “রয়েছো নয়নে নয়নে/ আনিসুল হককে শ্রদ্ধায় স্মরণ।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মানুম আবদুল কাইয়ূম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, “এমন খবর শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না মোটেই। আপনার সেই মোটিভেশনাল স্পিচের কথা মনে পড়ছে। যেটি শুনে চোখ ভিজে আসে। আপনি শান্তিতে ঘুমান। আপনার শোক সন্তপ্ত পরিবার (ব্যক্তিগত ও সিটি কর্পোরেশন) এর প্রতি সমবেদনা রইল ”

এরকম অসংখ্য পোস্ট ফেসবুকে ভাসছে। সবাই প্রিয় আনিসুল হককে হারিয়ে শোকাহত। সবাই তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছেন।

 

এসএইচ/টিকে