ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রাথমিকেও বাধ্যতামূলক হবে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা: জয়

প্রকাশিত : ০৪:২৪ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:২৫ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার

ক্রমান্বয়ে প্রাথমিকসহ দেশের প্রচলিত সব শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগবিষয়ক উপদেষ্টা উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বৃহস্পতিবার ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের দ্বিতীয় দিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের মানুষের জন্য উন্নয়নের নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। সে লক্ষ্যেই সরকার বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে কাজ করছে। কাজের ধারাবাহিকতায় সরকার আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের জন্য উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মেচন করছে।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, সারা বিশ্ব প্রযুক্তিতে অভাবনীয় উন্নতি সাধন করছে। প্রযুক্তির এই সুফল বাংলাদেশও পেতে চায়। এরই মধ্যে বাংলাদেশে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ। এই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডেই আপনারা দেখেছেন ড্রোন, বিশ্বের উন্নত রোবট সোফিয়াকে।

জয় বলেন, ভবিষ্যতে মোবাইল সুপারকম্পিউটিং, চালকহীন গাড়ি, কৃত্রিম বুদ্ধিমান রোবট, নিউরো প্রযুক্তির ব্রেন, জেনেটিক এডিটিং দেখতে পাবে। প্রযুক্তির এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের জন্য আমাদেরকে উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। এজন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে এখন কথা বলার সময় এসেছে। কারণ, দ্রুত বদলে যাওয়া প্রযুক্তি মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে। ফলে অর্থনীতির বিকাশ ও শিল্পায়নও দ্রুত ঘটছে। ২০২৫ সালের মধ্যেই ন্যানোম্যাটেরিয়ালের বাণিজ্যিক ব্যবহার দেখা যাবে। এসব ন্যানোম্যাটেরিয়াল স্টিলের চেয়েও ২০০ গুণ শক্ত কিন্তু চুলের চেয়েও পাতলা। থ্রিডি প্রিন্টেড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট হবে। ১০ শতাংশের বেশি গাড়ি হবে চালকহীন। সরকার, ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের জীবনেও এর প্রভাব দেখা যাবে। আগামীর বাংলাদেশ পৃথিবীর এসব উন্নত প্রযুক্তিগুলোকে গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে।

দেশে আইসিটি খাতের ল্যালেঞ্জগুলো এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, আইসিটি খাতের প্রধান ও প্রথম সমস্যা যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব। আমরা তাই দেশের সব ক্ষেত্রে আইসিটি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছি।

এ সময় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ডিজিটাল বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রগতির তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেছেন জনসংখ্যার দিক দিয়ে আমাদের দেশ খুবই সম্ভাবনাময়। জনসংখ্যার এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তাই প্রথম দরকার তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখবো।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সজিব ওয়াজেদ জয় বলেছেন আমরা তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানবসম্পদে দক্ষ করে তুলবো। তিনি এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে টুমরো (আগামীকাল) শব্দ উল্লেখ করেছেন। টুডে (আজ) বলেননি। তারমানে হচ্ছে তিনি ভেবে চিন্তে বাস্তব উন্নয়নের কথাই বলেছেন। আমিও বলবো আগামীতে আমরা তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে যাব।

সম্মেলনে কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডায়োডোনি কালোম্বো কোলি বাডিবাং, কম্বোডিয়ার ডাক ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী কান চানমেটা, ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দিনা নাথ ডঙ্গায়েল, মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী থরিক আলী লুথুফি, ফিলিপাইনের আইসিটি অধিদপ্তরের পরিচালক নেস্টর এস বোঙ্গাটা সৌদি আরবের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান ও মন্ত্রীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাহাদ আলীআরাল্লাহ অংশ নেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের এ মন্ত্রীরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণমূলকভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

 

আরকে/এসএইচ/