পর্দা নামল ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’র
প্রকাশিত : ০৯:৩৬ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ১২:৪০ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ রবিবার

জমজমাট আয়োজনের মধ্যদিয়ে শনিবার শেষ হলো দেশের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি আয়োজন ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭’। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল মেলার শেষদিনেও নানা বয়সি দর্শকের পদচারণায় মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা মেলায় আসেন। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর ‘রেডি ফর টুমরো’ স্লোগানে দেশের তথ্যপ্রযুক্তির বড় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের সফল পরিসমাপ্তি ঘটলো।
সমাপনী অনুষ্ঠানের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুবর মোস্তাফা জব্বার একটি দাবি তুলছিলো যে ইন্টারনেটের উপর যে ভ্যাট ট্যাক্স আছে তাও কীভাবে মওকুফ করা যায়। তবে সরাসরি আমি এখনি কিছু বলছি না। তবে এটা নিয়ে আজ মন্তব্য করছি। ভবিষ্যতে দেশের মানুষের জন্য ইন্টারনেটের উপর ভ্যাট ট্যাক্স মুক্ত নিয়ে কিছু হতে পারে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে সেই নির্বাচনী ইশতিহারের ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব। আজ আমরা সত্যি সত্যিই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে পৌঁছে গেছি। শুধু তাই নয় আমরা সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেটের জগতে একটা ভালো অবস্থানে রয়েছি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, আমরা এবার সোফিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তার কথা শুনেছি। তাই বলে কি আমরা নিজেরা সোফিয়ার মতো এমন রোবট তৈরি করবো না? ইতোমধ্যে আমি ইনোভেশন জোনে বন্ধু নামের এক রোবটের সঙ্গে কথা বলেছি।তার বয়স মাত্র দুই সপ্তাহ। তাই ভালো করে কথা শেখেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, সামনের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে নিজেদের তৈরি সোশ্যাল রোবট থাকবে। ইনশাল্লাহ আমরা সেটা পারবো।
তিনি জানান, প্রতিবছর এখন দেশে সাড়ে তিন কোটি মোবাইল, ৫ লাখ ল্যাপটপ আমদানী করতে হয়। এগুলো এখন দেশে তৈরি করা শুরু হয়েছে। আমরা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অন্তত বছরে দুই বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবো।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন পণ্যের উপর থেকে শুল্ক তুলে নেয়ার জন্য অথমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়া আগামী বাজাটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উপর বিশেষ বরাদ্দ রাখার জন্য অথর্মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান তিনি।
আইসিটি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী বলেন, এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড জমকালো আয়োজনে শেষ হয়েছে । এতে ৫ লাখের বেশি দর্শনার্থী আমাদের আয়োজন উপভোগ করেছেন। অনলাইনে ১৯ লাখেরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত থেকেছে।
বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন এক সময় দেশে কম্পিউটার মেলা করলে লোক খুঁজে পাওয়া যেত না আর এখন এসব মেলায় জায়গা দিতে পারি না। এই মেলা প্রমাণ করে দেশ কতটা তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ হয়েছে।
এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড বৃহৎ পরিসরে আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। চার দিন ব্যাপী এই আয়োজনে গুগল-নুয়ান্সসহ খ্যাতিমান তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই শতাধিক বক্তা মোট ২৪ এর অধিক সেমিনারে অংশ নেয়।
স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইটি ক্যারিয়ার-বিষয়ক সম্মেলনের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে ছিল ডেভেলপার সম্মেলন।
এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে ৩০০ টি প্রতিষ্ঠান ৫০২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন সাজিয়েছিল। প্রযুক্তি প্রেমীদের জন্য প্রদর্শনীতে সফটওয়্যার শোকেসিং, ই-গভর্নেন্স এক্সপো, স্টার্টআপ জোন, কিডস জোন, মেড ইন বাংলাদেশ জোন এবং ইন্টারন্যাশনাল জোন ছিল। এছাড়াও আইসিটি সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু প্রদর্শনী স্টল তাদের প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা সম্পর্কে ধারণা উপস্থাপন করে।
এবারের ডিজিটাল ওয়ালর্ল্ডের মূল আয়োজক সরকারের আইসিটি ডিভিশন। সহযোগী ছিল বেসিস, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, এটুআই। অংশীদার হিসেবে ছিল বিসিএস, বাক্য, আইএসপিএবি, বাংলাদেশ উইমেন ইন আইটি (বিআইডব্লিউটি), ই-ক্যাব, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম, সিটিও ফোরাম,. বিডিওএসএন, মায়া আপা, বিআইজেএফ, বোল্ড এবং ভিসিপিইএবি।
এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ছিল ইসলামি ব্যাংক, হুয়াওয়ে, রকেট, ওরাকল এবং আমরা। প্রদর্শনী চলে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এতে প্রবেশের জন্য আগতরা অনলাইনে নিবন্ধন করেন। স্পট নিবন্ধনের সুযোগও ছিল। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য মিলবে এই ওয়েবসাইটে: www.digitalworld.org.bd
আর