ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইতিহাসের কলংকিত দিন ১৪ ডিসেম্বর

প্রকাশিত : ০৫:৪৭ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পরেই পাক হানাদার বাহিনী নিশ্চিত হয়ে যায়, তাদের পরাজয় সন্নিকটে। এপর্যায়ে ১৪ ডিসেম্বর এদেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যার ঘৃণ্য নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু করে।

হানাদাররা এদেশীয় রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় জাতির মেধাবী সন্তানদের তাদের নিজ নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। তাদের লক্ষ্য ছিল বাঙ্গালী জাতি স্বাধীন হলেও যেন নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য হয়ে যায়।

মোট কতজন বুদ্ধিজীবী তারা হত্যা করেছিল তা এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সারা দেশব্যাপী অসংখ্য মেধাবী পেশাজীবী হত্যা করা হয়েছিল। যদিও ১৪ ডিসেম্বরের অপারেশনটি ছিল পরিকল্পনামাফিক।

বাংলাপিডিয়ার সূত্র অনুযায়ী, একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩জন সাংবাদিক,৪৯ জন চিকিৎসক,৪২ জন আইনজীবী, ১৬জন শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী।

১৪, ১৫ ডিসেম্বরে যাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয় তাদের মধ্যে অন্যতম ড. জি সি দেব, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. আলীম চৌধুরী, ড. গোলাম মোর্তজা, ড. মোহাম্মদ শফি, শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজউদ্দিন হোসেন, নিজামউদ্দিন লাডু ভাই, খন্দকার আবু তালেব, আনম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, নাজমুল হক, আলতাফ মাহমুদ, রশীদুল হাসান, ড. মুক্তাদির, ফজলুল মাহি, ড. সাদেক, ড. আমিনুদ্দিন, হাবিবুর রহমান, মেহেরুন্নেসা, সেলিনা পারভীন, সায়ীদুল হাসানসহ আরো অনেকে।

এ সময় বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছিল আলবদরদের হাতে। তারা ঠাণ্ডা মাথায় এসব মেধাবীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষে গড়া ট্রাইব্যুনাল এই গণহত্যার জন্য মতিউর রহমান নিজামী, গোলাম আযম, চৌধুরী মাইনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে দায়ি করে। এদের মধ্যে মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ও গোলাম আযম সাজাপ্রাপ্তঅবস্থায় মারা যান। বাকি দুজন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক অবস্থায় আছেন।