ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

কোন মুখে বিএনপি জনগণের কাছে ভোট চাইবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৬:৫৮ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ১০:১১ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ সোমবার

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোন মুখে তারা জনগণের কাছে ভোট চাইবে? তারা গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, জ্বালাও পোড়াও করেছে, মায়ের সামনে সন্তানকে হত্যা করেছে। দেশের বাইরে মানি লন্ডারিংয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। এখন তাদের শপিং মলের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

রোববার বিকালে আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলেন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, পঁচাত্তরের পরে যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা পথে বসলো, আর যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের ক্ষমতায় বসানো হলো। সেই সময়ে রাষ্ট্রদূত হলো কারা, যারা বঙ্গবন্ধুর খুনী। দেশের বাইরে তাহলে দেশের ভাবমূর্তি কোথায় থাকলো? এসব ঘটনা স্বাধীন দেশে বিশ্বাসীরা কিভাবে মেনে নিতে পারে? স্বাধীনতার কথাও বলবেন আবার যুদ্ধাপরাধীর মদদদাতাদের নিয়ে দল গঠন করবে- সেটা কিভাবে হতে পারে? আমরাএদেশকে এগিয়ে নিতে চাই আর তারা পেছনে টানে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তারা আবার স্বপ্ন দেখে ক্ষমতায় যাওয়ার, নির্বাচনে যাওয়ার। দেশের মানুষ যদি উন্নতি চান, তাহলে তাদের ভোট দিতে পারে না। যারা সৃষ্টি করে তাদের মায়া থাকে, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে তাদের থাকে না। বাংলাদেশকে নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দিবো না, খেলতে পারবে না।

এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর নানান সময়ের কথা টেনে বলেন, ৬৬ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর একটার পর একটা মামলা। সোহরাওয়ার্দীতেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এখানে দাঁড়িয়েই ১০ জানুয়ারি তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন কিভাবে বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। ১০ জানুয়ারির আগে নানানভাবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। যুদ্ধকালীন ও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে দেখেছি বঙ্গবন্ধুকে সবভাবে সাহায্য করতেন আমার মা। মা বাইরে যেতেন না। কিন্তু বাবার কাজে সবসময় তাকে পাশে দেখেছি।

আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা যুদ্ধাপরাধী— তাদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। ওই সময় অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত ছিল। যারা যুদ্ধাপরাধ করেছিল, তাদের জন্য রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না, তাদের ভোটের অধীকার ছিল না। কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর সাজাপ্রাপ্ত সব আসামিকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। যারা পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল, তাদের ফিরিয়ে আনা হয়। রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী যারা তৈরি করেছিল, যারা দেশকে ধ্বংস করেছে, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদেরই কেউ কেউ হয় উপদেষ্টা, কেউ কেউ হয় মন্ত্রী। আমাদের কী দুর্ভাগ্য, যারা দেশের জন্য রক্ত দিলো, যারা নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করলো, তারা হয়ে গেল অপরাধী। আর যারা দেশকে ধ্বংস করলো, যারা ধর্ষণ করলো, নির্যাতন করলো, লুটপাট করলো, তারাই হয়ে গেল মন্ত্রী।’

বিজয় দিবসে দেশের তরুণদের উচ্ছ্বাস-উৎসাহের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ স্বাধীন করেছি, এখন আমাদের নেতৃত্বেই দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি খুব খুশি হয়েছি যে এ বছর বিজয় দিবস ব্যাপকভাবে পালন করা হয়েছে। আপামর জনগণ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ, শিশু, যুবক থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষ যে উৎসাহ নিয়ে এই দিনটিকে পালন করেছে, তারা যেভাবে স্বাধীনতার চেতনাকে তুলে ধরেছে, তারা যেভাবে নতুনভাবে জাগ্রত হয়েছে, আমি তাদের মধ্যে আশার আলো দেখি। তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। উন্নত হবে।’

 

/ডিডি/ এআর