২০১৮ সালে পূর্ণ হবে এলডিসি উত্তীর্ণের সব শর্ত
প্রকাশিত : ০৯:১৭ পিএম, ৫ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

২০১৮ সালে বাংলাদেশের জন্য রয়েছে সু-খবর। নতুন এ বছরে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার সব শর্তই পূরণ করতে সক্ষম হবে দেশ। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার শর্তের তিনটি সূচকের দুটি এরই মধ্যে পূরণ হয়েছে। বাকি সূচকটি এ বছর পূর্ণ করে দেশ এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ হবে বলে নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলডিসি শর্ত পূরণের তিনটি সূচকের মধ্যে মাথাপিছু জাতীয় আয়ের পাশাপাশি অর্জিত হয়েছে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সূচকের লক্ষ্যমাত্রা। বাকি মানবসম্পদ সূচকের শর্তও এ বছরের মধ্যে পূরণ হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চলতি বছরটিতে এলডিসি থেকে বেরোনোর প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করবে বাংলাদেশ। ২০২১ সালের মধ্যে এলডিসি উত্তীর্ণের তিনটি সূচকে সন্তোষজনক অবস্থায় থাকবে। পরের তিন বছর থাকবে পর্যবেক্ষণে। তার পরই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অনুমোদন দেবে জাতিসংঘ।
এলডিসির তালিকা থেকে বেরিয়ে দ্রুতই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের অনেকগুলো মানদণ্ড অর্জন করতে পারবে বলে জানিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তার মতে, “দুর্ভিক্ষ, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাবসহ নানা বাধাবিপত্তির পরও প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে, যা সত্যিই বিস্ময়কর। বাংলাদেশের অর্থনীতির তিনটি বিস্ময়কর দিক হচ্ছে- জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহতভাবে বাড়ছে, মাথাপিছু আয়ের তুলনায় মাতৃমৃত্যুর হার অনেক কম। এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ কম হলেও অন্য দেশের তুলনায় সামাজিক সূচকে অনেক ভালো করছে। এত সীমাবদ্ধতার মধ্যে কীভাবে বাংলাদেশের এমন উন্নতি ঘটেছে, তা আমার কাছে রহস্যই। এভাবে চলতে থাকলে এলডিসির তালিকা থেকে বেরিয়ে দ্রুতই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের অনেকগুলো মানদণ্ড অর্জন করতে পারবে।
আর ২০১৯ সালের মধ্যেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বিনিয়োগ না বাড়িয়েও প্রবৃদ্ধি বাড়ানো যায়। এক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বাড়ানো গেলে ২০১৯ সালের মধ্যেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, এলডিসি থেকে বেরোনোর জন্য তিনটি সূচকের মধ্যে দুটি অর্জন প্রয়োজন। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সূচকে আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। বাকি দুটি সূচক হলো— মাথাপিছু জাতীয় আয় ও মানবসম্পদ। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৪২ ডলার হলেও এলডিসি থেকে বেরোনোর যোগ্যতা অর্জিত হবে। বাংলাদেশ ২০১৮ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বের হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করবে।
এ বিষয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গত বৃহস্পতিবার ‘রিবেজিং অ্যান্ড রিভিশন অব জিডিপি: বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক সেমিনারে দেশের নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
আরকে/টিকে