ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির মুক্তির পথ দেখায়’

প্রকাশিত : ০৫:১২ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০১:০৯ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ শনিবার

মাঈনউদ্দিন খান বাদল। একাত্তরে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে একজন টগবগে ছাত্রনেতা। সামনে থেকে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দেন। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ছাত্রসমাজকে মুক্তির চেতনায় উদ্ধুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনেন।

স্বাধীনতার পর ছাত্রলীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পরেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। পরে মাঈনউদ্দিন খান বাদলসহ সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছাত্রলীগের একটি অংশ ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর গঠন করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। বর্তমানে সেই দলটির একাংশের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন মাঈনউদ্দিন খান বাদল।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের প্রেক্ষাপট এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি নিয়ে সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনের মুখোমুখি হন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইনের প্রতিবেদক কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক।

একুশে টিভি অনলাইনঃ মুক্তিযুদ্ধে কীভাবে যুক্ত হলেন, একটু শুনতে চাই?

মাঈনউদ্দিন খান বাদলঃ একাত্তরের উত্তপ্ত সময়ে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মার্চের অগ্নিঝরা দিনগুলিতে এটা বুঝতে সক্ষম হয়েছিলাম যে, আমাদেরকে একটা সশস্র যুদ্ধের দিকে যেতে হবে। পাকিস্তানিদের কাছে আমাদের আর পাওয়ার কিছু নাই। যে কারণে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের মাঠে সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এছাড়া স্কুলজীবনে জুনিয়র ক্যাডেট কোর, কলেজ জীবনে ইউটিসির মেম্বার থাকার কারণে সামরিক বিদ্যা সম্পর্কে প্রাথমিক একটা ধারণা ছিল। এই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের দিক নির্দেশনা আমাদের কাছে আরও পরিস্কার হয়ে উঠে। জাতির পিতা সেদিন বলেছেন ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম`।

আমাদের নেতা সিরাজুল আলম খান আমাদের ডেকে ব্রিফ করলেন যে, যার যার এলাকায় চলে যাও,সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও। সেই সময় ছোট ছোট কিছু শ্লোগান ছিল ‘অ’ একটি বাংলা অক্ষর, বাঙ্গালির জীবন ‘ক’ একটি বাংলা অক্ষর, বাঙ্গালির জীবন। মার্চের ১০/১২ তারিখের দিকে আরও কিছু লিফলেট নিয়ে চট্টগ্রামে চলে গেলাম।

আমার বিচরণ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজের এলাকায় এর আগে ততটা বিচরণ ছিল না। নেতার নির্দেশনা পেয়ে এলাকার ছাত্রলীগারদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করি এবং মুক্তিকামী জনগণের কাছে লিফলেট বিতরণ করি। আমি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এলাকা থেকে সিভিল গান (ব্যক্তিগত বন্দুক) মুক্তিযুদ্বাদের পক্ষে নিয়ে ব্যবহার করি।

ঢাকা থাকে ওয়াবদার একটা গাড়ি এসেছিল এলাকায়। সেটা আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ব্যবহার করেছি। এ ব্যবহারের সুত্র ধরে প্রশিক্ষণক্যাম্প খুলি। কিন্তু এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হলো সেই প্রশিক্ষণ কাম্পে যে (সিভিল গান) যোগার করেছিলাম সেই বন্দুকগুলো প্রশিক্ষণে অনেকটা শেষ করে ফেলেছি। সুতরাং বন্দুকের অনুপাত গুলির সংখ্যা বেশ-কম ছিল।

যাদেরকে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি তাদের মধ্যে ২০/২৫ যারা খুব ঘনিষ্ঠ তারা একত্রে থাকতাম। একটা কোর বাহিনী গঠন করেছিলাম।২৬ তারিখ প্রত্যূষে আমার এক কৃষক আত্মীয় দৌড়ে এসে আমাকে বলল সর্বনাশ হয়েছে। হাজার হাজার সৈন্য বিলের উপর দিয়ে আমাদের এলাকার দিকে আসছে। আমি বললাম তোমরা বন্দুকগুলো নিয়ে কানুর দিঘির ভিতরে চলে যাও। ওখানে আশ্রয় নাও। আমি ওদের একটা সময় বেঁধে দিলাম।ওই সময়ের মধ্যে যদি আসতে না পারি তাহলে তোমরা পাহাড়ের দিকে চলে যাবে।

আমি দেখলাম দূর কুয়াশার ফাঁকে পিঁপড়ার মতন লোকজন সামনের দিকে আসছে। তখন চিন্তা করলাম পাকিস্তানি সেনারা বিলের মধ্য দিয়ে আসার সাহস করবে না। তারা আসলে রাস্তা দিয়ে আসবে। এরা বোধ হয় বাঙালি সৈন্য হবে। যোগাযোগের অভাবে ঢাকায় কি ঘটছে তা বুঝার সাধ্য আমাদের কারো ছিল না। তখন তো আর টেলিফোনের যুগ ছিল না। যুবক বয়সে বোধ হয় এটি আমার সেরা সিদ্ধান্ত ছিল যে, এরা বাঙালি সৈন্য না। দেখলাম এরা হেলে-দোলে অনেকটা ক্লান্ত পদক্ষেপে আসছিল।তখন আমরা দাঁড়িয়ে চিৎকার করে `জয় বাংলা` শ্লোগান দিতে থাকি।

আমার একহাতে বন্দুক, আরেক হাতে দেশের পতাকা নিয়ে বলছি জয় বাংলা। লোকগুলো যখন আমাদের দেখলো তখন তারা পজিশন নিয়ে নিচ্ছিল। কেউ শুয়ে, কেউ বসে যাচ্ছিল। আমি কিন্তু চিৎকার করতে করতে সামনে গেলাম। তাদের মধ্যে প্রথম লোকটি সাদা গোফ, অনেক বয়স্ক একজন সৈন্য সে আমাকে বলে-` সিয়ার কো বাচ্চা তুম লোক বি হাতিয়ার রে লিয়া ইয়ে মুলক আজাদ হয়া।`

এটা ছিলো তার প্রথম অভিব্যক্তি। সেই অফিসারের নাম হারুন আহমেদ চৌধুরী। সে ক্যাপ্টেন ছিল। সে আমাকে বলে তুমি কে? বললাম আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমরা মুক্তিযুদ্ধের জন্য অস্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। সে বলল তোমাদের সঙ্গে কি বঙ্গবন্ধুর যোগাযোগ আছে? তখন আর কি বলব? উপায় না পেয়ে বললাম হ্যাঁ আছে। তাহলে এই খবরটা ওনাকে দাও যে, ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্ট স্বাধীনতার প্রশ্নে রি-বোল্ট করেছে। আকাশে তখন পাকিস্তানি একটা প্লেন উড়ছিল। মেজর মীর শওকত আলী বললেন, এখানে আমাদের থাকা নিরাপদ না। তুমি আমাদেরকে পাহাড়ের দিকে পাঠিয়ে দাও। তখন তাদেরকে কোড়ল দাঙ্গা পাহারের দিকে পাঁঠিয়ে দিই। ২৬ মার্চ বিকেলে এদেরকে খুঁজতে খুঁজতে বোয়ালখালির দিকে এল কিছু আওয়ামী লীগ নেতা।

ইটিভি অনলাইন- স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আপনার মত কি?

মাঈনউদ্দিন খান বাদলঃ একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, ২৬ মার্চ সারাদিন জিয়া চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ছিলেন। এখনও যারা বয়স্ক লোকজন বোয়ালখালীতে রয়েছেন তারা এ বিষয়ে সাক্ষী দেবেন। কোনোভাবেই সেদিন জিয়া কালুরঘাটে যাননি। পরের দিন অর্থাৎ ২৭ মার্চ গেছেন এবং নিজেকে প্রধান সেনাপতি হিসেবে দাবি করে বক্তব্য দেন। যেটা মহাপাপ। যদি সঠিকভাবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে বিষয়টি বিশদভাবে আলোচনার দাবি রাখে যে, তিনি এভাবে ঘোষণা দিলেন কেন? নিজেকে যুদ্ধের প্রধান দাবি করলেন কেন? রেডিওতে ঘোষণাটি যখন যায় আওয়ামী লীগ নেতা এ.কে খান সাহেবসহ অনেকে বললেন এগুলি সে কি বলছে?

একুশে টিভি অনলাইন : সেনাবাহিনীর পিছনের সারির একজন কর্মকর্তা হিসেবে জিয়াউর রহমান তখন ঘোষণাটা দিতে পারলেন কি করে?

মাঈনউদ্দিন খান বাদল: এটা তো নিছক কোনো সামরিক অভ্যুত্থান কিংবা বিদ্রোহ ছিল না। এটা গণমানুষের সংগ্রাম। যেখানে গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রয়েছেন, সেখানে জিয়া কোথা থেকে এসে নিজেকে যুদ্বের প্রধান দাবি করলেন? তখন তার ড্রাফটা পরিবর্তন করে নতুন করে লেখা হলো। সংশোধিত দ্বিতীয় লেখাটি বারবার প্রচার হয়েছে। যা আমাদের জাদুঘরেও সংরক্ষিত আছে। মুক্তিযুদ্ধের ঊষালগ্নে আমি যা বলেছি ঘটনাটি ঠিক এ রকমই। সংসদে এ নিয়ে বহুবার বক্তব্য রেখেছি। ঘোষণা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করার কোনো অবকাশ নেই। যদি কেউ করেন সেটা অন্যায়।

প্রসঙ্গত, আমি বলেছিলাম ১৭ ডিসেম্বর ভোরবেলা মুজিব বাহিনীর লোকাল ফোর্স নিয়ে যুদ্ধ করে বেতারকেন্দ্রটি মুক্ত করি। সে সময় আমি ঘোষণা করি `বাংলাদেশ স্বাধীন, চট্টগ্রাম স্বাধীন। আমাদের নেতা শেখ ফজলুল হক মনি অবিলম্বে আমাদের মাঝে এসে পৌঁছাবেন।`

সামনে একটা বেতার কেন্দ্র ছিল বিধায় ঘোষণা দিতে পেরেছিলাম। আর এজন্য জাতির কাছে প্রত্যাশা করতে পারিনা যে, আমি জাতির চাচা হয়ে গেলাম। আমি বলছি যে, এই রকম ঘোষণা ১৭ ডিসেম্বর ভোর বেলায় আমি মাঈনউদ্দিন খান বাদলও দিয়েছিলাম। তাহলে জিয়া কীভাবে স্বাধীনতার ঘোষক? সেদিন মেজর জলিল ছিলেন, খালেদ মোশাররফ ছিলেন, সি আর দত্ত, সফিউল্লাহ,  মীর শওকত আলী গর্জে উঠেছিলেন। সুতরাং প্রশ্নটা হল,আপনি ডিক্লেয়ার করলেন কেন?

একুশে টিভি অনলাইনঃ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর প্রামাণ্য ঐতিহ্যে জায়গা করে নিয়েছে,একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনার মূল্যায়ন কি?

মাঈনউদ্দিন খান বাদল : ৭ মার্চের ভাষণ মানেই আমার আমি। এই যে মাঈনউদ্দিন খান বাদল ‘বিকজ অফ ৭ মার্চ’। আমি ৭ মার্চের মঞ্চের সামান্য একজন পাহারাদার ছিলাম। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ময়দানে যখন গিয়েছি, তখন আমার মনের মধ্যে অগণিত প্রশ্ন ছিল। আমার চিত্ত অস্থির ছিল কি হবে? কি হতে যাচ্ছে? সে সময় প্রশ্নগুলি আমাকে উদ্বেলিত করেছে। সুতরাং একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়া, একদল মানুষ আমরা সেদিন ময়দানে উপস্থিত হয়েছিলাম। কিন্তু ভাষণ শোনার পর যে মাঈনউদ্দিন খান বাদল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গেছে, সে তখন একজন পুরোপুরি যোদ্ধা। সে তখন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।

কারণ সেদিন নেতা বলেছিলেন, ‘তোমাদের ভাতে মারবো,পানিতে মারবো।নেতা বলে দিয়েছেন, যার যার আছে তা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। নেতা বলে দিয়েছেন, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দিব।’

ওই ১৯ মিনিটের ভাষণের সব থেকে বড় দিক হল, যখন ভাষণ শুনতে গেলাম আমি তখনো ‘আই ওয়াজ অ্যান ইনোসেন্ট সোল উইথ আউট ইন টার্গেট ইনফ্রন্ট মি`। আর আমি যখন ১৯মিনিট পর বেরিয়ে এলাম তখন-আই এম অ্যা সোলজার। ‘আই হ্যাভ গট এ টার্গেট ইনফ্রন্ট অব মি`। পৃথিবীতে কোনো ভাষণ একটা জাতিকে ২০ মিনিটে একটা ড্রামাটিক চেঞ্জ, কোয়ালিটিভ চেঞ্জ, গুণগত পরিবর্তন এনে দিতে পারে সেটা খুঁজে পাওয়া দুস্কর। আমাদের দেশে একটা বদভ্যাস আছে- সবসময় আমরা বিদেশি স্বীকৃতিকে খুব বড় করে দেখি।

বিদেশি স্বীকৃতি না দিলে, ইউনেস্কো স্বীকৃতি না দিলে এই ভাষণ কি ছোট থাকতো? এ ভাষণ একটি জাতিকে মুক্তির পথ ধরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং ইউনেস্কো বলেছে এজন্য আমাদের চোখ খুলে গেছে। এতোদিন তাহলে আমাদের চোখ খুলেনি।এ প্রবণতাকে সঠিক মনে করিনা।দ্বিতীয়টি হল আমি অনেককে বলতে লক্ষ্য করি,এ ভাষণ ওই ভাষণ থেকে সেরা।তাদের বলি ‘ডোন্ট ডু দিস’।

আপনি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিকে যদি মোনালিসা আরেকবার আঁকতে বলা হয় সে পারবে না, পিকাসোকে গুয়ের্নিকা আঁকতে বললে, সে পারবে না, আপনি নজরুলকে `বিদ্রোহী কবিতা` লিখতে দিলে সে পারবে না। বিশ্বে মনুষ্যত্বের সেরা সৃষ্টিগুলির কোনো সেকেন্ড রিপিটেশন হয় না। প্রেক্ষাপট একবারই আসে। কোনোটার সঙ্গে কোনোটাকে তুলনা করা ঠিক হবে না। একটি রক্তাক্ত সিভিল ওয়ারের পরে লিংকন গেটিজবার্গ ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। রক্তের সাগরে দাঁড়িয়ে তাকে সে সময়ে বক্তৃতা করতে হয়েছিল। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষকে সামনে রেখে আমেরিকার কালো মানুষের নেতা মাটিন লুথার কিং লাখ লাখ নিগৃহীত কালো মানুষের জন্যে বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন-‘আই হ্যাভ গট অ্যা ড্রিম’।

এগুলোর প্রতিটির প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। অথবা নেলসন ম্যান্ডেলা যখন প্রায় ২৬ বছর জেলখেটে বেরিয়ে আসেন তখন তিনি প্রায় বাঁকা হয়ে গেছেন ম্যান্ডেলা সেদিন জোহান্সবার্গের এভিনিউতে বলেছিলেন, আমি ২৬টি বছর সাদা মানুষের অত্যাচার সহ্য করেছি, যদি আমার প্রয়োজন হয় তাহলে কালো মানুষের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সারাজীবন লড়াই করব।’

সুতরাং কেউ যদি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে তুলনা করে সেটি হবে বোকামি। একটি জাতিকে সম্পূর্ণ পরিবর্তিত করে সুনিদিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে অগ্রসর করে দেয়ার সেই ভাষণ বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।

একুশে টিভি অনলাইন : আপনি রাজনীতিবিদ না হলে কি হতেন?

মাঈনউদ্দিন খান বাদল : সেটা বলা মুশকিল। মানুষকে ভালবাসার একটা বড় নেশা আমার মধ্যে ছিল। এটা এখনো আছে। এখনো আমি মানুষকে কথা দিয়ে আহত করতে, অপমানিত করতে ভীষণ লজ্জাবোধ করি। মানুষের প্রতি গভীর প্রেম থেকেই আমি রাজনীতিতে এসেছি। সত্তর বছর বয়সে এখনোও মানুষের প্রেমে ডুবে আছি।আমার ছেলেমেয়েরা বলে- আর কি তোমার পাওয়ার বাকি? আমি বলি কেন? তারা বলে-‘তুমি দেশের সব আন্দোলনে ছিলে, মানুষ তোমার কথা বলে, তুমি বীর মুক্তিযোদ্ধা। এমপিও হয়েছ। সন্তান হিসেবে তোমাকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। এবার তো তুমি থাম। নাতিদের সঙ্গে খেলো, তাদের সময় দাও। আমার ছেলে মেয়েদের বলে দিয়েছি, আমি যেকোনো দিন বেড়িয়ে যেতে পারি।আবার ডাক এলে বেড়িয়ে পরবো। কারণ "আই এম হার্ট অ্যাট এ সোলজার। লেট মি ডাই উইথ ওনার। উইথ ওনার গিভ ফাইটিং।

একুশে টিভি অনলাইন : আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্যে।

মাইন উদ্দিন খান বাদল : আপনাকে ও ইটিভির সবাইকে ধন্যবাদ।