ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

অনশনে যাবেন মাদ্রাসা শিক্ষকরাও

প্রকাশিত : ০৪:৫৪ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০১৮ রবিবার

জাতীয়করণের দাবি না মানলে অনশনে যাবেন বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে নিবন্ধন পাওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকরা।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ এ কথা জানান।

জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে সপ্তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা। চলমান এ কর্মসূচীতে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনও সাড়া মেলেনি।

আন্দোলন কর্মসচীর ডাক দেওয়া শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেসুর রহমান বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে দিন, না হলে আমরা শুধুমাত্র অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো না, আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে এগোব।

তিনি বলেন, আজ রোববার আমরা কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের নতুন প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর বরাবর স্মারকলিপি দেবো। আর সোমবার সমিতির নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে আমরণ অনশনের দিকে যাওয়া যায় কীনা সে ব্যাপারে আলোচনা করবো।

এদিকে আজ প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচীতে অন্যদিনের তুলনায় উপস্থিতি বেড়েছে। বিভিন্ন ধরণের দাবি সংবলিত ফেস্টুন গলায় ঝুলিয়ে শিক্ষকেরা এই কর্মসূচি পালন করছেন।

বছরের শুরুতে ১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনকারী এ শিক্ষকেরা বলছেন, সারা দেশে রেজিস্ট্রেশনকৃত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ১৮ হাজার ১৯৪টি। তবে এখন চালু আছে ১০ হাজারের মতো। এগুলোতে মাদ্রাসাশিক্ষার প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষক আছেন প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার ৬ হাজার ৬৭৬ জন শিক্ষক সরকার থেকে কিছু ভাতা পান। প্রধান শিক্ষকেরা মাসে আড়াই হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষকেরা পান ২ হাজার ৩০০ টাকা। অন্যরা সরকার থেকে কোনো বেতন-ভাতা পান না।

তারা বলছেন, সরকার থেকে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এ জন্য তারা দাবি করছেন রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে যেভাবে সরকারি করা হয়েছে, তাদেরও সেভাবে জাতীয়করণ করতে হবে।

কর্মসূচীতে অংশ নেয়া গাজীপুর শ্রীপুর গুনিয়াকুড়ি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমি এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে আসছি। প্রতিবছরই ভাবি আমাদের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হবে। কিন্তু অনেকবার অনেক পক্ষ থেকে আশ্বাস পেয়েও তা শেষ পর্যন্ত পায়নি। তিনটি সন্তান নিয়ে আমার পরিবারের অনেক কষ্টে দিন কাটে। নিজে যদি বেতন না পাই তো সংসার চালাবো কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবার জাতীয়করণ ছাড়া আর ঘরে ফিরবো না। প্রয়োজনে আমরণ অনশন করবো। আমরা যদি দেশের নাগরিক হয় সরকার অবশ্যই আমাদের কথা শুনবেন এবং দীর্ঘদিনের এ চাওয়া পূরণ করবেন।

 

আরকে/এএ/