বিদায়ী বছরে সহিংসতার ঘটনা কমেছে ৪৬৭টি
প্রকাশিত : ০৭:৫৯ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার

সদ্যবিদায়ী ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু (ধর্মীয় ও জাতিগত) ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর কমপক্ষে এক হাজার ৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালে এ ধরণের ঘটনার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৭১টি। অর্থাৎ ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সহিংসতার ঘটনা কমেছে ৪৬৭টি।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানানো হয়েছে। সংখ্যালঘু (ধর্মীয় ও জাতিগত) ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার প্রতিবেদন-২০১৭’ উপস্থাপন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, আয়োজক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হত্যাকান্ডের পরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ ঘোষণায় গৃহীত পদক্ষেপের কারণেই ২০১৭ সালে এ ঘটনা তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে।
অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ২০১৭ সালে অধিকাংশ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার সংখ্যা আনুমানিক ৩০ হাজার। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও বেশি। বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে ৮২জন। একই সময়ে আরও ২২টি রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ও মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা হত্যাকান্ড বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন সহিংস হামলা ও শারীরিক নির্যাতনে আহত ও জখম হয়েছেন ১৮জন, ধর্ষন ও ধর্ষনচেষ্টার ঘটনা ৪৪টি, এদের মধ্যে ৪ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৪৭১টি। ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি (শশ্মান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ) দখলের ঘটনা ঘটেছে ১১৪টি। দখল ও উচ্ছেদের তৎপরতা ১২০টি। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ২২টি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিউবার্ড গোমেজ বলেন, ২০১৮ সালের শেষ দিকে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবো কিনা, তাও নিয়ে আমরা সন্দিহান।যদি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এই নির্বাচনে ভোট না দিতে পারে, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কারা নির্যাতন করেছে, তার তালিকা আমাদের কাছে আছে। যদি ওইসব কোনও ব্যক্তিকে সরকার নমিনেশন দেন, তাহলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্বাচন বর্জন করবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কাজল দেবনাথ, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, জয়ন্ত সেন দীপুভিক্ষু সুধীনন্দ প্রিয় প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংবাদপত্র, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও সংগঠনের নিজস্ব অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আরকে//