ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

খদ্দের সেজে যৌনপল্লী থেকে বোনকে উদ্ধার

প্রকাশিত : ১১:৪৯ এএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার

ভারতের বিহারের বেগুসরাই জেলার যৌনপল্লী বখরী এলাকায় এক যুবক দুইশ’ টাকা তুলে দিয়েছিল এক দালালের হাতে। তারপরেই সেই যুবকের `পছন্দ` করা যৌনকর্মীর ঘরে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই যুবকটি বেরিয়ে আসে সেই ঘর থেকে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবারও সে ফিরে এসেছিল সঙ্গে পুলিশ নিয়ে।

যৌনকর্মীদের মধ্যে থেকে যুবকের `পছন্দ` করা সেই মেয়েটি সামনে এগিয়ে এসেছিল। দিন কয়েক আগে বেগুসরাইয়ের ওই যৌনপল্লীতে যে মেয়েটিকে `পছন্দ` করেছিল দালালের হাতে টাকা তুলে দেওয়া যুবকটি, সে তারই বোন।

বছর তিনেক আগে হারিয়ে যাওয়া বোনকে উদ্ধার করতেই ওই যুবক `খদ্দের` সেজে হাজির হয়েছিল ওই যৌনপল্লীতে। বিহারের পুলিশ সেদিন দুজন নারীকে দেহব্যবসা থেকে উদ্ধার করেছে। তাদেরই মধ্যে একজন বিহারেরই আরেক জেলা শিবহরের বাসিন্দা প্রতিমা (ছদ্মনাম)।

তিনি নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরে ফোনে বিবিসিকে জানান, বছর তিনেক আগে অশোক খলিফা নামে এক ব্যক্তি সীতামাড়ী জেলা থেকে তাকে বুখরীতে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই ওই কাজ করাতে বাধ্য করেছিল সে। ছোট ছেলেকে নিয়ে তখন থেকেই বখরীর ওই যৌনপল্লীতে একরকম বন্দী জীবন কাটাতেন ওই নারী। বাইরের জগতের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখতে দেওয়া হতো না।

ওই নারী জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে আমার ঘরে আমার বাপের বাড়ির এলাকা থেকে এক ফেরিওয়ালা এসেছিল। আমি তার মোবাইল নম্বরটা নিয়ে রেখেছিলাম। মাঝে তার সঙ্গে ফোনে কয়েকবার আলোচনা করেছি কীভাবে ওখান থেকে পালানো যায়।

গ্রামে ফিরে এসে ওই নারীর আত্মীয়-স্বজনকে পুরো ঘটনা জানান ওই ফেরিওয়ালা। বাপের বাড়ির কয়েকজন ওই নারীকে যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করার জন্য বেগুসরাইতে হাজির হন।

প্রতিমার ভাই মনোজ (ছদ্মনাম) বিবিসিকে বলেন, ফোনেই ওই ফেরিওয়ালা আমার বোনকে জানিয়ে রেখেছিল যে আমি আসছি। সেইমতো আমি অশোক খলিফা নামের ওই দালালের কাছে যাই খদ্দের সেজে। দুইশ’ টাকা দেওয়ার পর আমার সামনে দুজনকে হাজির করা হয়েছিল। চোখের ইশারা করে দিয়েছিলাম বোনকে।

প্রতিমার বাবা আগেই বখরী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

এরপরে ভাই থানায় গিয়ে পুলিশ দল নিয়ে ফিরে আসেন। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রতিমা এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বাসিন্দা আরেক নারীকে।

বখরী থানার ওসি শরৎ কুমার বিবিসিকে জানিয়েছেন, অভিযোগপত্রে নাম থাকা নাসিমা খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত অশোক খলিফাকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।

সূত্র: বিবিসি

একে// এআর