মাদকের ভয়াবহতা মোকাবেলা করতে হবে সামাজিকভাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত : ০৩:৫৬ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদকের ভয়াবহ ছোবল অন্যতম সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।এটা সামাজিকভাবেই নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের এ ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় আমরা ইতোমধ্যে পার্শবর্তী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছি। ভারতকে ফেনসিডিল চোরাচালানের পথগুলোতে নজরদারি বাড়াতে অনুরোধ করেছি। যার জন্য সম্প্রতি এ ফেনসিডিলের চালান কম আসছে।
এ ব্যাপারে আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে তাদের নিজের দেশকেও ইয়াবার ভয়াবহতা গ্রাস করছে। তাই তারা সর্বনাশী মাদক ইয়াবার কারখানা বন্ধের উদ্যোগ নিবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করন উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহম্মেদ ভূইঞা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মাদকসেবী ঐশীর মতো আর কাউকে দেখতে চাই না।যার জন্য তার পরিবার চিন্তা করবে। আমাদের প্রধান সম্পদ যুব সমাজ। এ যুবকদের বিপথে হারালে আমরা আমদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। তাই এ মাদকের ভয়াবহতা রোধে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ল্যাবরেটরী ও প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে এটা বন্ধ করতে সর্বপ্রথম সামাজিক সচেতনতা, উদ্যোগ ও আন্দোলন দরকার। স্কুল-কলেজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এর কুফল নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি বলেন, দেশে ৭০ লাখ মাদকাসক্তর মধ্যে আমাদের নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।তাই মাদকাসক্তদের নিরাময় ব্যবসায়িকভাবে না দেখে মানবিক বিবেচনায় দেখে বেসরকারি খাতকেও নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে।
ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষায় আমরা দেশের প্রতিটি বিভাগে ১ হাজার শয্যা বিশিষ্ট নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে পর্যালোচনা করছি। এছাড়া প্রতিটি জেলায় মাদক নিরাময় কেন্দ্র পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা যায় কী না তাও পর্যালোচনা করছি।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহম্মেদ ভূইঞা বলেন, আমাদের ২৭টি জেলাতে এখনও কোনো মাদকাসক্তনিরাময় কেন্দ্র নেই। মাদকে আসক্ত রোগীর সংখ্যা দেশে ৭০ লাখ। এসব রোগীকে সুষ্ঠুভাবে নিরাময়ে আনতে আমাদের আরও বেশি নিরাময় কেন্দ্র দরকার। তাই সরকারের কাছে আমাদের প্রস্তাব মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের অবকাঠামো দিক সরকার নিশ্চিত করে বাকি কাজগুলো বেসরকারি পর্যায়ে ছেড়ে দিতে পারে।
আরকে//