ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

তারকালাপে লাক্স সুন্দরী সামিয়া

‘নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি’

প্রকাশিত : ০৪:৩২ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:৪৭ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার

লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার-২০১২ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু হয় সামিয়া সাঈদের। রূপ-গ্ল্যামার-মেধার দৌড়ে হাজার হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেই আসরের চ্যাম্পিয়ন বনে যান তিনি। তবে অন্য সবার থেকে একটু ভিন্নপথে হাটছেন সামিয়া। মিডিয়ায় নিয়মিত হলেও একেবারেই অল্প কাজ করতে থাকেন। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতে যে নাটকগুলোতে তিনি অভিনয় করেছেন তার মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন। তবে মডেলিংয়ে নাটকের চেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছেন তিনি। একাধিক টিভিসিতে কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মডেল হিসেবে কাজ করেছেন এই সুন্দরী।

সৌন্দর্যের আকাশে তরুণ তারকা হলেও মিডিয়াপাড়ায় তার পথ চলায় রয়েছে মেধাবী ছায়া। এরই মধ্যে অনেকগুলো ধারাবাহিক এবং একক নাটকে সু-অভিনয় করে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। মেধাবী এই সুন্দরী তার ভালোলাগা-মন্দলাগাসহ অনেক কিছু জানিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ

 

ইটিভি অনলাইন : কেমন আছেন?

সামিয়া সাঈদ : (হাসি দিয়ে) অনেক ভালো।

ইটিভি অনলাইন : শুরুতেই জানবো বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে। কি নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

সামিয়া সাঈদ : ধারাবাহিকে কাজ বেশি করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিমাসেই একটা থেকে দুইটা সিঙ্গেল নাটকও করা হচ্ছে।

ইটিভি অনলাইন : সম্প্রতি বিজ্ঞাপনে কোন কাজ করেছেন?

সামিয়া সাঈদ : বিজ্ঞাপনের মধ্যে রবির কাজ করেছিলাম। তবে নতুন করে উপস্থাপনায় কাজ করছি। বিষয়টি নিয়ে দারুণ এক্সাইটেড।

ইটিভি অনলাইন : আপনিতো আগেও উপস্থাপনা করেছেন। নতুন এটা কোন বিষয়ের উপর?

সামিয়া সাঈদ : রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠান। এটি একটি রান্না বিষয়ক রিয়েলিটি শো। সুপার শেফ। এটার হোটিং আমি করছি।

ইটিভি অনলাইন : অভিনয় করছেন। পড়ালেখা করছেন। এখন আবার উপস্থাপনায় কাজ করছেন। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা যাচ্ছে। কিভাবে সামলাচ্ছেন?

সামিয়া সাঈদ : সব কিছু আসলে রুটিনের ব্যপার। নিজেকে কিভাবে রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসা যায় সেই চেষ্টা থাকে। যেমন ধরুণ আমি চার দিন ক্লাস করছি। বাকি তিনদিন শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকছি। আবার দেখা যায় দু একদিন ক্লাস অফ দিয়ে শুটিং করছি। সব কিছু মিলিয়ে ব্যলেন্স করি। তবে এ জন্য হয়তো অনেক সময় ক্লান্তি আসে। যখনই একদিন ছুটি পাই তখন মাইন্ড ফ্রেস করতে চেষ্টা করি। সব ব্যস্ততার মধ্যে একটা দুটা দিন রেখে দিলে রিফ্রেশ হয়ে যায়।

ইটিভি অনলাইন : অভিনয়ের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকের কথা বলেছেন। কি কি ধারাবাহিকে কাজ করছেন এখন?

সামিয়া সাঈদ : একটা আছে ‘যখন কখনো’। মজার বিষয় হচ্ছে ওখানে আমি আর প্রসূন আছি। সে আমার বড় বোন, আমি তার ছোট বোন। বিউটি-সুইটি। এছাড়া আছে ‘আপন খবর’। একটা পারিবারিক কাহিনী। আরও আছে। সব মনে করতে পারছি না।

ইটিভি অনলাইন : একটা সময় বাংলা ভাষার উচ্চরণের ক্ষেত্রে আপনার কিছুটা সমস্যা ছিলো। এখন তো দেখছি সেটা কেটে গেছে। কিভাবে সম্ভব হলো?

সামিয়া সাঈদ : আমি ইংলিশ মিডিয়ামে পড়েছি। আমরা যে বাংলিশ বলছি এবং ভুল বলছি সেটা কিন্তু জানতাম না। আমার কাছে মনে হতো এটাইতো ভাষা। আমি বলছি সে বুঝতে পারছে। শুদ্ধভাষায় আমার কোন সমস্যা ছিলো না। কিন্তু শব্দগুলো ঠিকমত হচ্ছে কিনা এটা কেউ কানে দিতেন না। কেউ ঠিকও করে দিতো না। এখন মিডিয়াতে ঢোকার পর আমাকে স্ক্রিপ্ট পড়তে হচ্ছে। আমার বানানগুলো দেখতে হচ্ছে। এটা খুব কাজ করেছে।

আমার ইংরেজি গল্পের বই পড়ার অভ্যাস আছে। তাই ওটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু বাংলাতো আমি চোখে দেখছি না তাই চর্চ্চাটাও হয়নি। স্কুল লেভেল থেকে শিক্ষার্থীরা যখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় তখনও কিন্তু ইংরেজিতে পড়তে হয়। কিন্তু এখন যখন স্ক্রিপ্ট পড়ছি আমাকে বাংলাটা পড়তেই হচ্ছে। এটা পড়েই আমার বাংলাটা অনেকটা ভালো হয়েছে।

ইটিভি অনলাইন : আপনিতো একটা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কি অবস্থায় আছে?

সামিয়া সাঈদ : ওটার ডাবিং হয়ে গেছে। সিনেমাটির নাম ‘কমলার রকেট’। বর্তমানে সেন্সর বোর্ডে জমা আছে। সেখান থেকে ছাড়পত্র পেলেই বড় পর্দায় দেখা যাবে। পুরো সিনেমাটাই লঞ্চে ভ্রমণের মধ্যে। লঞ্চের মধ্যেই পুরো কাজটি হয়েছে। আমরা ঢাকা থেকে মোড়েলগঞ্জ গিয়েছি। মোড়েলগঞ্জ থেকে আবার ঢাকায় এসেছি। আবারও মোড়েলগঞ্জ গিয়েছি। এভাবেই প্রথম লটের কাজ হয়। পরে আবারও একই ভাবে কাজ হয়েছে। কহিনীটা ছিলো ঠান্ডার সময়। কুয়াশা দিয়ে ঢাকা। একটার পর একটা গরম কাপড় পাল্টিয়েছি। কিন্তু গ্রীষ্মের সময় যখন শুটিং হলো। ও মাই গড। এতো গরম। তারপরও বলবো ভালো একটা কাজ হয়েছে।

কমলা রকেট সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। সিনেমা আর নাটকের কাজ সম্পূর্ণ আলাদা। এই সিনেমায় কনফিউজিং চরিত্র দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করতে পারব। এখন অপেক্ষায় আছি। দর্শকদের ভালো লাগবে আশা রাখি।

ইটিভি অনলাইন : আপনিতো একটা বড় রিয়েলিটি শো থেকে এসেছেন। কাজও করছেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় গুনি শিল্পী হওয়া সত্যেও কেউ কেউ নিয়মিত থাকছেন না। এর কারণটা কি বলে মনে হয়?

সামিয়া সাঈদ : যে যাই বলুক, মিডিয়াটা কিন্তু খুবই কঠিন একটা জায়গা। আমি অভিনয় করতে পছন্দ করি, ভালোবাসি। এ জন্যই আমি এখানে আছি। এটা আমার পেশা নয়। যারা এটাকে পেশা হিসেবে নেয় তাদের ক্ষেত্রে হয়তো একঘেয়েমি হয়ে যায়। তাছাড়া দেখা যাচ্ছে কারও বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। বিয়ের পর অনেকে আছেন যারা মিডিয়াকে ঠিকঠাক মেনে নিতে পারেন না। বিভিন্ন কারণে এটা হয়। যারা পুরোপুরি প্রফেশন ও ভালোলাগার জায়গা থেকে মিডিয়াতে কাজ করেন তারাই মনে হয় টিকে থাকেন।

ইটিভি অনলাইন : অনেক ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

সামিয়া সাঈদ : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

এসএ/