ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

গর্ভভাড়া বাড়ছে ইউক্রেনের নারীদের মধ্যে

প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

এশিয়ার দেশ নেপাল, ভারত ও থাইল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে গর্ভভাড়া ক্রমান্বয়ে নিষিদ্ধ হওয়ায় ইউক্রেনের দিকে ঝুঁকছে বিশ্বের নিঃসন্তান দম্পত্তিরা। ইউরোপের সবচেয়ে দরিদ্র দেশের তালিকায় ইউক্রেন শীর্ষে অবস্থান করছে। তাই দেশটিতে নিম্ন আয়ের চেয়ে, গর্ভভাড়া দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে দেশটির নারীদের মধ্যে।

গর্ভভাড়া দেওয়া এমনই একজন নারী আন্না কারিনা। মাধ্যমিক পাশ করা ১৮ বছরের ওই তরুণী শুরুতে একটি হোটেলে মাসিক ১৬ হাজারা টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেন। তবে একদিন টেলিভিশন প্রতিবেদনে গর্ভভাড়া দেওয়ার বিষয়টি শুনে আগ্রহী হয়ে ওঠে কারিনা। একবার শিশুধারণে দেশটির নারীদের আয় হয় ২০ হাজার ডলারের মত, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৬ লাখ টাকার মতো।

এই বড় অঙ্কের টাকায় লোভে পড়েন আন্না কারিনা। চাকরি ছেড়ে দিয়ে গর্ভভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে গোল বাঁধে দেশের আইন। দেশের আইনে কোন নারীকে গর্ভভাড়া দেওয়ার আগে অন্তত এক সন্তান নিতে হয়। এরপরই একটি কন্যা সন্তান লাভ করেন আন্না কারিনা। তখন তার বয়স ২০ বছর। এরপর ২১ বছর বয়সে প্রথম গর্ভভাড়া দেন আন্না কারিনা।

এদিকে আন্না কারিনার মতো শত শত নারী দেশটিতে গর্ভভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করছে। তবে অর্থ উপার্জন করলেও তাঁদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আন্না কারিনা গর্ভভাড়ার বিষয়ে এক অনলাইনে তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘২১ বছরর বয়সে আমি যখন প্রথম গর্ভভাড়া দিলাম, এর অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ানক। আমার জরায়ুতে যথাযথভাবে শুক্রানো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়নি। তাই মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। তবে অবশেষে একটি সুস্থ্য কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলাম। এখন আমার বয়স ২৪ বছর। এখন আবারও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিলাম। এ নিয়ে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দিলাম। একজন আমার নিজের, অপরজন নিঃসন্তান দম্পত্তিদের।’

এদিকে আন্না কারিনার মতো শতশত নারী গর্ভভাড়া দিতে উৎসাহী হয়ে ওঠেছে। তাই ২০১৫ সালের পর দেশটিতে গর্ভভাড়া দেওয়ার হার বেড়েই চলেছে। আন্না বলেন, তাদের দেশে প্রতি বছরই অসংখ্য নিঃসন্তান দম্পত্তি আসেন সন্তান নেওয়ার জন্য। আর সেই গর্ভভাড়া দিয়েই দেশটির নারীদের সংসার ও দিনানিপাত চলে বলে জানা গেছে।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক গবেষণা সংস্থা এভারিনঘাম জানিয়েছে, দেশটিতে ১ হাজার শতাংশ পর্যন্ত গর্ভভাড়া দেওয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নারীরা কম টাকার চাকরি ছেড়ে বা বেকার জীবন ছেড়ে গর্ভভাড়া দেওয়ার দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র: বিবিসি
এমজে/