ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

‘তিন মাসে ঢাকায়, দুই বছরে গোটা দেশে ফোর-জি’

প্রকাশিত : ০৫:৩৮ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজধানী ঢাকা আর দুই বছরের মধ্যে দেশের আনাচে কানাচে পৌছে যাবে চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোর-জি। আর এ সেবা পৌছে দেবে দেশের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল সংযোগ অপারেটর গ্রামীণ ফোন। নিলামের মাধ্যমে ফোর-জি সেবার স্পেকট্রাম বা তরঙ্গ বরাদ্ধ নেওয়ার পর এ কথা জানায় নরওয়ে ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি।

আজ সকালে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুরেলটরী কমিশন বা বিটিআরসি ফোর-জি তরঙ্গের জন্য নিলাম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে অংশ নেয় মোবাইল সংযোদ প্রদানকারী অপারেটর গ্রামীণ ফোন এবং বাংলালিংক। উক্ত নিলামে ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনে গ্রামীণ ফোন। যার মোট মূল্য ছিল ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর একটি হোটেলে নিলাম উত্তর এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ফোন বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি বলেন, নিত্য নতুন ফিচারের মাধ্যমে আমরা আমাদের গ্রাহকদের উন্নত সেবা দিতে সবসময় বদ্ধ পরিকর। তারই অংশ হিসেবে দেশে ফোর-জি/এলটিই সেবা চালু করনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে গ্রামীণ ফোন। টেলিনর গ্রুপ (গ্রামীণ ফোনের মালিকা প্রতিষ্ঠান) হিসেবে আমরা ১১তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ফোর-জি সেবা চালু করতে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিজিটাল খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

এসময় তিনি বলেন, লাইসেন্স পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পুরো ঢাকাজুড়ে পাওয়া যাবে এই ফোর-জি সেবা। আর পুরো দেশজুড়ে তা পাওয়া যাবে আগামী দুই বছরের মধ্যে।

এসময় ইন্টারনেটের মূল্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাইকেল বলেন, ইন্টারনেটের সব থেকে সাশ্রয়ী দামের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। ফোর-জি আসার পর এ দাম আরও কমবে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে গ্রাহকদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় আমূল পরিবর্তন আসবে এটুকু নিশ্চিত করতে পারি।  তবে গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় রেখেই ইন্টারনেটের দাম নির্ধারিত হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

গ্রামীণ ফোনের নেটওয়ার্ক প্ল্যানিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মুনীর বলেন, আমরা ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু পর থেকে ধারাবাহিকভাবে নেটওয়ার্কের উন্নয়ন সাধন করছি। শুরুর দিকে ওয়াপ এবং এরপর এজ বা জিপিআরএস এর মাধ্যমে গ্রাহকদের ইন্টারনেট সেবা দিতাম। বড় ধরণের পরিবর্তনটা আসে ২০১৩ সালে থ্রি-জি চালুর মাধ্যমে। আর এখন তো ফোর-জি’ই এসে গেল। আর এর মাধ্যমে প্রযুক্তির সঙ্গে স্পেকট্রামের যে সীমাবদ্ধতা তা আমরা অতিক্রম করতে পারব। এখন আমাদের কাছে ট্যু-জি, থ্রী-জি, ফোর-জি সবই আছে। যেখানে গ্রাহকের যেমন চাহিদা সেখানে সেভাবেই ইন্টারনেট দিতে পারব আমরা।

দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগই এখন গ্রামীণ ফোনের থ্রী-জি আওতাভুক্ত বলে সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ফোনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। পাশাপাশি আসন্ন ফোর-জি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটের গতি কেমন হবে সে বিষয়ে কোন নির্ধারিত সীমা এখনও উল্লেখ করা হয়নি বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে মুঠোফোনে ইন্টারনেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে পাঁচ থেকে সাত মেগাবিট হতে পারে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি।

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসি’র থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফো-জি লাইসেন্স পাওয়ার কথা রয়েছে গ্রামীণ ফোনের। এরপরেই দেশে চতুর্থ প্রজন্মের এই ইন্টারনেট সম্প্রসারণে কার্যক্রম শুরু হবে। গ্রামীণ ফোনের বিদ্যমান গ্রাহকদের বিনামূল্যে তাদের পূর্বের সিম পরিবর্তন করে ফোর-জি সমর্থিত সিম নিতে অনুরোধ জানানো হয় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।

// এস এইচ এস// এআর