ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

‘মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে বন্দর-সম্ভাবনা কাজে লাগান’

প্রকাশিত : ১০:৪৭ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৪৮ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের কাতারে নিতে হলে দরকার আমাদের ব্যবসায়ীক প্রবৃদ্ধি। আর ব্যবসায়ীক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজন আমদানি-রফতানির জন্য সহজলভ্য পরিবহন ব্যবস্থা। তাই পণ্য আনা-নেওয়ার মাধ্যম বন্দরগুলোর সমস্যা দূর করে এর সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে। তবেই দেশ মধ্যম আয়ে উত্তীর্ণ হবে। নইলে তা কঠিন হয়ে পড়বে।

মঙ্গলবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রি আয়োজিত অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা যারা পরিচালনা করেন, তাদের এক ধরণের একচেটিয়া ক্ষমতা থাকে। তারা যেন ব্যবসায়ীদের উপর এই একচেটিয়া ক্ষমতা প্রয়োগ না করে। এক্ষেত্রে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের একটা ভূমিকা থাকতে পারে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সব সুপারিশ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়না। তবে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ করার যে কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি নূর-ই আলম চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের উপর নির্ভর্শীল। তারা অন্য কোনো বন্দরে যেতে চায় না, ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ জট লেগেই থাকে। অথচ সরকার পায়রা বন্দরেও ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সেগুলো কাজে লাগাতে পারেননি।

সেমিনারে ব্যবসায়ীদের তুলে ধরা বন্দরের নানাবিধ সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও সিঙ্গাপুরে অনেকগুলো বন্দর থাকলেও সেখানে একটাই কর্তৃপক্ষ, একটাই আইন। ফলে তাদের বন্দরে পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা কম হয়। ব্যবসায়ীদের কোন ভোগান্তি পোহাতে হয় না। বাংলাদেশেও এনন একটিই আইন ও কর্তপক্ষ দরকার।

সেমিনারে নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিদ্যমান সমস্যা দূর করণের ওপর জোর দিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। নদীপথের যোগাযোগের উপর গুরুত্ব দিয়ে এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সমস্যা মোকাবেলায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তীর্ণ কঠিন হয়ে পড়বে। এ ছাড়া আগামীতে ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে সেটাও কঠিন হয়ে যাবে। যদি জাহাজজটসহ বন্দরের অন্যান্য সমস্যাগুলো অচিরেই দূর করা না যায়।

তিনি আরো বলেন, এখনও পর্যন্ত আমাদের পণ্যবোঝাই জাহাজ বন্দরে ১৫ থেকে ২০ দিন আটকে থাকে। আমাদের আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে বন্দরগুলোর এসব সমস্যা দূর করতে হবে।

তিনি বলেন, পণ্য  আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের স্বাধীন হওযার সুযোগ দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা যেন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে তারা কোনো বন্দর ব্যবহার করবেন। আর কোনটা ব্যবহার করবেন না।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআইয়ের জাতীয় অবকাঠামো বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সমন্বয়ক ইয়াসের রিজভী। অন্যান্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন পানগাঁও আইল্যান্ড কনটেইনার টারমিনালের ম্যানেজার আহমেদুল করিম চৌধুরী, মার্কস এন্ড স্পেন্সারের কান্ট্রি হেড স্বপ্না ভৌমিক প্রমুখ।

আরকে/টিকে