ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

ঋণ মঞ্জুরীপত্র বাংলায় লেখার নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ১০:৪৬ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার

ব্যাংকগুলোর ঋণ মঞ্জুরীপত্র বাধ্যতামূলকভাবে বাংলায় প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব পর্যায়ের গ্রাহকের বোঝার সুবিধার্থে আগামী ১ জুলাই থেকে আবশ্যিকভাবে এ নির্দেশনা কার্যকর করতে হবে। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হলো। রোববার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্নিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ঋণ মঞ্জুরীপত্র ব্যাংকের সঙ্গে গ্রাহকের একটি চুক্তিপত্র। বেশ কয়েক পৃষ্টার এ চুক্তি ইংরেজিতে হওয়ায় অনেকে সেখানে কি লেখা আছে বুঝতে পারেন না।

উদাহরণ স্বরুপ তিনি বলেন, বেশিরভাগ ঋণ মঞ্জুরীপত্রে সুদহারের বিষয়ে বলা হয় বাজারে চলমান হারে নির্ধারিত হবে। অর্থাৎ- সুদহার বাড়লে বাড়ানো হবে। আর কমলে কমানো হবে। এতে করে কেউ ১০ শতাংশ সুদে ঋণ নিলো। কয়েকমাস পরে বাজারে সুদহার বৃদ্ধির ফলে বেড়ে ১২ শতাংশ করা হলো। তখন তার কিস্তির পরিমাণ বেড়ে যায়। এ নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকারের সঙ্গে গ্রাহকের বাকবিতণ্ডা হয়। সম্প্রতি সুদহার দ্রুত বৃদ্ধির প্রবণতার ফলে এ বিষয়টি বেশি ঘটতে পারে বিধায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অধিকাংশ ব্যাংক তাদের চিঠিপত্র, ফরমের পাশাপাশি ঋণ মঞ্জুরীপত্রও ইংরেজি ভাষায় প্রণয়ন করছে। ঋণ মঞ্জুরীপত্র গ্রাহকের সঙ্গে সম্পাদিত ব্যাংকের একটি চুক্তিপত্র। চুক্তিপত্রের সব শর্ত পরিপালনে গ্রাহক আইনত অঙ্গীকারাবদ্ধ বিধায় গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ঋণ মঞ্জুরীপত্রের শর্তসমূহ বোধগম্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। ঋণ মঞ্জুরীপত্র বাংলা ভাষায় লেখা হলে সার্বজনীনভাবে গ্রাহকের জন্য সুবিধাজনক হবে এবং ব্যাংকিং কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা বজায় থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে সংবিধানের বাংলা ভাষা প্রচলন আইনের উদ্দেশ্য পূরণ এবং গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষেণের লক্ষ্যে ঋণ মঞ্জুরীপত্র আবশ্যিকভাবে বাংলায় প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হলো। তবে ঋণ মঞ্জুরীপত্র বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায়ও প্রণয়ন করা যেতে পারে। আগামী ১ জুলাই থেকে যা কার্যকর করতে হবে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩নং অনুচ্ছেদের বিধান পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করার উদ্দেশ্যে প্রণীত বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ এর ৩(১)নং ধারায় বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারি অফিস, আদালত, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যতীত অন্যান্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন আদালতের সওয়াল জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলী আবশ্যিকভাবে বাংলায় লেখার নির্দেশনা রয়েছে।

এসএইচ/