ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

ইন্টারনেটের প্রভাব

শিক্ষার্থীদের ভাবনার দুয়ার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

প্রকাশিত : ০৪:২৭ পিএম, ১০ মার্চ ২০১৮ শনিবার

একুশ শতকের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়তে থাকে। এ সময় মানুষ ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

২০১৪ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু আমেরিকায় প্রতিটি মানুষ মাসে গড়ে ২৭ ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে সময় ব্যয় করেন। আর সারা মাসে মোবাইল ফোনে ব্যয় করেন ৩৪ ঘণ্টা।

রিপোর্টটি ছিল আজ থেকে ৪ বছর আগের। নিঃসন্দেহে বলা যায়, কয়েক বছরের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর নেতিবাচক প্রভাবগুলো সামনে স্পষ্টহচ্ছে। এসব খারাপ বা নেতিবাচকদিকগুলো মানুষকে দৈহিক, মানসিক এবং আবেগের দিক দিয়ে স্থায়ী ক্ষতি করছে।

জেনে নিন অতিরিক্ত ইন্টারনেটের ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাবগুলো-

সৃজনশীলতার ঘাটতি: মার্ক জাকারবার্গ যেমন ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বানিয়ে সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনই তার আইডিয়া চুরি করে এক শ্রেণীর মানুষ ইন্টারনেটে কনটেন্ট ডেভেলপ করছে। তারাও সৃজনশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন।

কিন্তু কিছু মানুষ এসব কনটেন্ট চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। এতে আসল কনটেন্ট ডেভেলপারকে নিরাশ করছে নতুন কিছু বানানো থেকে।

আবার ইন্টারনেটে এত বেশি তথ্য আছে যে, মানুষকে নতুন করে আর ভাবতে হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের ভাবনার দরজা এখন ইন্টারনেট পর্যন্তই থেমে যাচ্ছে। তাদের চিন্তা করে উত্তর আবিষ্কার করতে হচ্ছে না।

সাইবার বুলিয়িং: সামাজিক মাধ্যমে সাইবার বুলিয়িং। বুলিয়িং বলতে বোঝায় অবমাননা করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা। কোনো মানুষকে সামনাসামনি অবমাননা ও খারাপ মন্তব্য করার চেয়ে ইন্টারনেটে করা অনেক সহজ। সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন তারকা, ব্যক্তি, ছাত্র, নারী এ সাইবার বুলিয়িংয়ের বড় শিকার। সাইবার বুলিয়িংয়ের শিকারে অনেক সময় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে থাকে।

শারীরিক অক্ষমতা: শিক্ষা ব্যবস্থায় কেবল পড়াশোনা নয়, শারীরিক কর্মকাণ্ডও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্কুল-কলেজে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিরতি বা টিফিন টাইম দেওয়া হয়। অপরদিকে ইন্টারনেট এমন একটি গ্লোবাল সিস্টেম যেখানে ব্যবহারকারীদের শারীরিক পরিশ্রম করার দরকার হয় না।

যারা বেশি সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করে তারা তুলনামূলকভাবে খেলাধুলা, ব্যায়ামের মতো শারীরিক কার্যক্রমে থাকতে পারে না। তাই ইন্টারনেটে বেশি আসক্তিদের শারীরিক অক্ষমতার দিকে নিয়ে যায়। এর ফলে মানুষ শারীরিকভাবে এক সময় দুর্বল প্রাণীতে পরিণত হয়ে যাবে।

ঘুম না হওয়া: রাত্রে ঘুম না হওয়া এক প্রকার রোগ।ইন্টারনেট যুগে কর্মব্যস্ত মানুষের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে ইন্টারনেট। কোনো ব্যক্তি একবার নেটে বসলেই তার ঘন্টার পর ঘন্টা চলে যায়, এতে সে রাতে পরিমিত ঘুম দিতে পারে না।

ঘাড়ের ব্যথা: মাথা নিচু করে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করার অভ্যাস আছে অনেকের। এ কারণে ঘাড়ে ব্যথা দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময় ধরে মাথা নিচু করে স্মার্টফোন বা মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস চিরস্থায়ী ঘাড়ের সমস্যার জন্ম দিতে পারে। মাথা কাত করে, নিচু হয়ে, বাঁকা করে একদিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার ফলে এটি মানুষের ঘাড়ের ওপর চাপের সৃষ্টি করে। এটি পরে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি করে। সূত্র: ইন্টারনেট

/ আর / এআর