ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিবিএস জরিপ

বেকার বেড়েছে ৮০ হাজার, নতুন কর্মসংস্থান ১৩ লাখ

প্রকাশিত : ১১:০০ এএম, ২১ মার্চ ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১২:২৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশে বেকার জনসংখ্যা বেড়েছে। গত এক বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার বেড়েছে প্রায় ৮০ হাজার। তবে বেকার বাড়লেও বেকারত্বের হার আগের মতোই আছে। অর্থাৎ, ৪ দশমিক ২ শতাংশে রয়েছে। এদিকে গত এক বছরের ব্যবধানে ১৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে এমন তথ্যই ওঠে এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপের এ ফল প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জরিপের ফল প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এ জরিপ করেছে বিবিএস। ত্রৈমাসিকের পাশাপাশি পুরো অর্থবছরের পরিসংখ্যান একীভূত করে মোট শ্রমশক্তির চিত্র তুলে ধরেছে সংস্থাটি।

জরিপে মোট জনসংখ্যা ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ১৩ লাখ। এর মধ্যে ১০ কোটি ৯১ লাখ মানুষের বয়স ১৫ বছরের বেশি। আর ১৫ বছরের বেশি বয়সী লোকদের কর্মক্ষম হিসেবে ধরা হয়। তাদের মধ্যে ৬ কোটি ৩৬ লাখ লোক শ্রমশক্তিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাকি ৪ কোটি ৫৫ লাখ লোক শ্রমশক্তির বাইরে। তার লেখাপড়া করছেন বা গৃহিণী বা বেশি বয়স্ক হওয়ার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে নেই। এছাড়া শ্রমশক্তিতে থাকা লোকদের মধ্যে কাজ ৬ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার করছেন। বাকি ২৬ লাখ ৮০ হাজার লোক বেকার। বেকারদের মধ্যে ১৩ লাখ নারী ও ১৪ লাখ পুরুষ রয়েছেন। তবে বেকারত্বে পুরুষের হার বাড়লেও নারীদের বেকারত্বের হার কমেছে। নারীদের বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের নারীদের বেকারত্বে হার ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আর ২০১৩ সালে ছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, দেশে যে হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। এছাড়া শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কাজের সুযোগ প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না।

জরিপে দেখা গেছে, পুরুষ শ্রমশক্তির ৮০ দশমিক ৫ শতাংশ কর্মসংস্থানে আছে। যা আগের জরিপে ৮১ দশমিক ৯ শতাংশ ছিল। আর নারী শ্রমশক্তির মধ্যে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশের। যা আগের জরিপে ছিল ৩৫ শতাংশ ৬ শতাংশ। আর মোট শ্রমশক্তির কর্মসংস্থান হয়েছে ৫৮ দশমিক ৫ শতাংশের। যা আগের জরিপে ছিল ৫৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এই কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বেশি হয়েছে কৃষি খাতে। তবে আগের তুলনায় তা কমেছে। কৃষির পরেই রয়েছে সেবা খাত। এ খাতে ৩৯ শতাংশ কর্মসংস্থান হয়েছে। আর শিল্প খাতে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়ছে। গত বছরের জরিপে দেখা গেছে মোট কর্মসংস্থানের ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ আনুষ্ঠানিক খাতে হয়েছে, এবারের জরিপে তা বেড়ে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ কর্মসংস্থান অনানুষ্ঠানিক খাতে হয়েছে।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতমধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এ অগ্রগতির ফলে কর্মসংস্থান বাড়ছে। সরকার আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় নীতি, অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে। সরকার এমন একটি প্ল্যাটফরম তৈরি করতে চায়, যাতে সহজেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতে পারে।

এ জরিপ প্রকল্পের পরিচালক কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষিত বেকার বাড়ছে। কারণ শিক্ষিত লোকেরা সুশৃঙ্খল কাজ চান। তাই কিছু সময় বেকার থাকেন।

একে// এআর